কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। টানা ষষ্ঠ দিনের মতো দুই দেশের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার (৩০ এপ্রিল) পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে।
ইসলামাবাদের দাবি, ভারত পেহেলগামের সাম্প্রতিক হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে এই পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে পাকিস্তান হামলার এই অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পর্যটন শহর পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় হামলাকারীরা। এতে ২৬ জন নিহত হন।
ভারত এই হামলার জন্য তিনজনকে দায়ী করেছে, যাদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি করা হয়েছে। ভারতের মতে, তারা কাশ্মীর অঞ্চলে সক্রিয় সন্ত্রাসী।
এ ঘটনার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে ভারতের উড়োজাহাজ খাত।
পাকিস্তান সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ভারত ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের ওপর সামরিক অভিযান চালাতে পারে- এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।’
একইসঙ্গে ইসলামাবাদ জানায়, তারা সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যাখ্যান করে এবং ভারতের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত আছে পাকিস্তান।
তবে, ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই সেনাপ্রধানদের যেকোনো পাকিস্তানি হামলার জবাব দেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তাদের সংঘাত এড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনও উভয় পক্ষকে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, কাশ্মীর ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান। হিমালয় অঞ্চলের এই ভূখণ্ড পুরোপুরি দাবি করে উভয় দেশ।
আপনার মতামত লিখুন :