ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধাবস্থার মুখোমুখি পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কারাবন্দি নেতা ইমরান খানের মুক্তি এবং সর্বদলীয় বৈঠকে তাঁর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান সংকটময় সময়ে পিটিআই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে একটি সর্বদলীয় সম্মেলন (মাল্টি-পার্টি কনফারেন্স) আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।
সিনেটে পিটিআইর অবস্থান
সোমবার (২৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের সিনেটে পিটিআইর পার্লামেন্টারি নেতা সিনেটর আলী জাফর বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্য এখন গৌণ। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থ রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। এমন পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠকই সবচেয়ে সময়োপযোগী পদক্ষেপ।”
তিনি আরও বলেন, ‘ইমরান খান যদি এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন, তাহলে পাকিস্তান থেকে বিশ্ববাসীর কাছে একটি ঐক্যবদ্ধ বার্তা যাবে। এতে দেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও শক্তিশালী হবে।’
ইমরান খানের অবস্থান
২০২৩ সালের মে মাসে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। পিটিআই মনে করে, তাঁর অনুপস্থিতি একটি জাতীয় ঐক্য তৈরিতে বড় অন্তরায়।
দলের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে ইমরান খানের মুক্তি ও সংলাপে অংশগ্রহণের পথ খুলে দিতে হবে।
ভারতের প্রতি কড়া ভাষায় সমালোচনা
সিনেট অধিবেশনে আলী জাফর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ‘নাৎসি মানসিকতার শাসন’ বলেও অভিহিত করেন।
তার দাবি, ‘ভারত মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে, অথচ পাকিস্তান নিজেই দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার।’
যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে
কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক এবং সামরিক উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই দেশই চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
এমন অবস্থায় রাজনৈতিক ঐক্য ও জাতীয় নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালোভাবে অনুভূত হচ্ছে।