রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুটি পৃথক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস ও ইউক্রেনীয় প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফ্রান্স ২৪, বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স ও আরব নিউজের মত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ধারণা করছে, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটতে পারে।
শান্তিচুক্তির কাঠামো তৈরি করতে সৌদি যাচ্ছেন উইটকফ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং শান্তিচুক্তির কাঠামো তৈরি করবেন।
হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে উইটকফ বলেন, "আমি মনে করি, আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে যুদ্ধবিরতি এবং একটি শান্তিচুক্তির কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া।"
যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জেলেনস্কি
একই দিনে এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, "আমি সোমবার সৌদি সফরে যাচ্ছি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের জন্য। আমার প্রতিনিধি দল সেখানে থাকবে এবং আমাদের আমেরিকান অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে। ইউক্রেন শান্তির পক্ষে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী।"
জেলেনস্কির ক্ষমা চাওয়ার চিঠি
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ওয়াশিংটন ও কিয়েভের সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে। এরপর জেলেনস্কি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি পাঠান।
উইটকফ এই চিঠিকে "ইতিবাচক পদক্ষেপ" হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনের জন্য অনেক কিছু করেছে, সে বিষয়েও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছিল।"
সৌদিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, তবে শান্তি আলোচনায় নয়
ইউক্রেন ইস্যুতে সরাসরি অংশ নিতে না গেলেও সৌদি আরবে বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, আগামী মাসে তিনি সৌদিতে সফর করবেন। ট্রাম্প উল্লেখ করেন, "প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আমার প্রথম বিদেশ সফর ছিল রিয়াদে, যেখানে আমি সৌদির সঙ্গে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করেছিলাম।"
তিনি আরও জানান, "আমার অনুরোধে সৌদি আগামী ৪ বছরে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়টিও রয়েছে।"
২ লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয়কে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন, যারা টেম্পরারি লিগ্যাল স্ট্যাটাসে ছিলেন।
তবে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।
এপ্রিলের মধ্যেই শরণার্থীদের টেম্পরারি লিগ্যাল স্ট্যাটাস *বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে।
মূলত, যুদ্ধ শুরুর সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন, যিনি ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনে এই নীতি বদল হতে যাচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :