সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

সিরিয়ায় শান্তি প্রক্রিয়ার পথে বাধা দুই মুসলিম দেশ

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম

সিরিয়ায় শান্তি প্রক্রিয়ার পথে বাধা দুই মুসলিম দেশ

ছবি: সংগৃহীত

বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় সাম্প্রতিক সহিংসতা জানান দিচ্ছে দেশটিতে খুব শিগগির শান্তি ফিরে আসছে না। কারণ, আসাদপন্থি ছাড়াও দেশটির সরকারকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। তারা সিরিয়াকে কোনো মতেই স্থিতিশীল থাকতে দিতে চায় না।

লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা ‘আশারক আল-আওসাত’-এর নির্বাহী সম্পাদক ইয়াদ আবু শাকরার লেখা একটি নিবন্ধ আরব নিউজের মতামত বিভাগে প্রকাশিত হয়। সেখানে তিন দেশের ষড়যন্ত্রের নমুনা স্পষ্ট।

মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে ইরানের আত্মপ্রকাশ করতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে দমন করতেই মূলত ইসরায়েল সিরিয়ায় আক্রমণ চালিয়েছে। এর জন্য ইসরায়েলের পাশাপাশি তুরস্ককেও খেসারত দিতে হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, ইসরায়েল একমুহূর্তের জন্যও তার ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলো থেকে বিচ্যুত হয়নি, যার প্রধান একটি হলো তার প্রাচীন মেসিয়ানিক স্বপ্ন ইউফ্রেটিস থেকে নীলনদ পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডের ওপর সর্বাত্মক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। বস্তুত এ স্বপ্নই চরমপন্থি, বর্ণবাদী ও জনসংখ্যা স্থানান্তরের প্রবক্তাদের সাহস জুগিয়েছে, যারা এক বিপর্যস্ত ভূমি এবং তার অবসন্ন ও দিশাহীন অধিবাসীদের ওপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে উদ্যত হয়েছে।

সিরিয়া এবং তার বহুত্ববাদী সামাজিক ব্যবস্থা বহুকাল ধরেই ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু, যারা এ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে চাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তেল আবিব সুকৌশলে সন্দেহ ও ভয়ের আবহ সৃষ্টি করে আসছে।

অন্যদিকে আসাদ সরকারের সঙ্গে পুরোনো মজবুত ও গভীর সম্পর্ক থাকায় ইরান চেষ্টা চালিয়েছে সিরিয়ায় পরিবর্তনের গতিধারাকে প্রতিহত করতে। সিরিয়ার অভ্যন্তরে তেহরানের ক্ষমতাধর অঞ্চল হলো তারতুস শহর ও লাতাকিয়া উপকূল, যেখানে তারা আলাওয়ি সম্প্রদায়ের মনে ভীতির সঞ্চার করে তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায়ে রেখেছে। আবার ইসরায়েল নিজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দ্রুজ সম্প্রদায়কে কৌশলগতভাবে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ সিরিয়ার কুনেইত্রা, দেরা ও সুয়ায়দা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছে।

এ ছাড়া রয়েছে ইউফ্রেটিস নদীর পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদের আধার হওয়ার পাশাপাশি, এই অঞ্চল মার্কিন ভূরাজনৈতিক স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দু এবং একই সঙ্গে ইরান ও তুরস্কের মধ্যে ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দান। সিরিয়ার কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠী যত দুর্বল হয়ে পড়বে, কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাও তত প্রবল হয়ে উঠবে। স্বাধীনতার জন্য তারা সিরিয়ার আরব পরিচয়কে প্রত্যাখ্যান করে, জাতীয় সংহতির বিরোধিতা করে, শত্রুর সঙ্গে আপস করতেও প্রস্তুত।

আরবি/এসএম

Link copied!