মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

হোলির রং মাখতে না চাওয়ায় মুসলিম ব্যক্তিকে ‘পিটিয়ে হত্যা’

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম

হোলির রং মাখতে না চাওয়ায় মুসলিম ব্যক্তিকে ‘পিটিয়ে হত্যা’

নিহত মোহাম্মদ শরীফ ও তার মেয়ে। ছবি: সংগৃহীত

হোলির রং মাখতে না চাওয়ায় এক মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পুলিশের দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ের। 

এই ঘটনার পর এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

জানা গেছে, ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শরীফ (৪৮)। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী।  সেখানে গাড়িচালক হিসেবে কাজ করতেন। দুই মাস আগে ছুটিতে বাড়ি ফিরেছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম মাকতুব মিডিয়া জানিয়েছে।

নিহত শরীফের ভাতিনা মোহাম্মদ শামীম হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, হিন্দুদের হোলি উৎসবের পরদিন তার চাচা অটোরিকশাযোগে একটি দুগ্ধখামারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একটি মন্দিরে হোলি উদযাপন করতে আসা একদল লোক অটোরিকশাটি আটক করে। ওই ব্যক্তিরা তাকে হেনস্তা করছিল। এবং তার শরীরে রং লাগানোর চেষ্টা করছিল।

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তখন আমার চাচা তাদের রং না মাখানো জন্য অনুরোধ করছিলেন। বিষয়টা সেখানেই খ্যান্ত হয়। কিন্তু পরক্ষণেই তারা আবারও তাকে ঘিরে ফেলে।’ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে শামীম বলেন, ‘চাচাকে ওই লোকগুলো থাপ্পড় মারতে থাকে। মারের চটে এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’

শরীফের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এবং পরে তার বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

শরীফের মেয়ে বুশরা অভিযোগ করেছেন, তার বাবা শুধু মারধরের শিকারই হননি তার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লুটও করা হয়েছে। স্থানীয় এক সাংবাদিককে তিনি বলেন, তার বাবাকে জোরপূর্বক রং মাখানো হয় এবং তারপর তাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় উন্নাও পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। পুলিশ বলছে, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগকে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহত মোহাম্মদ শরীফের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ অন্যান্য অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে মাকতুব মিডিয়া জানিয়েছে, শরীফ যখন মসজিদে যাচ্ছিলেন তখন তার উপর হামলা করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা শরীফকে উদ্ধার করে পানি পান করান। কিন্তু তিনি দ্রুত নুয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উন্নাও উত্তর থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অখিলেশ সিং হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘পুলিশ এই মামলাটি তদন্ত করছে। আইনশৃঙ্খলার কোনও সমস্যা নেই। অভিযোগ দায়েরের পর আমরা প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন নথিভুক্ত করব।’

আরবি/এসএমএ

Link copied!