শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অস্থিরতার শঙ্কা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের  অর্থনীতিতে অস্থিরতার শঙ্কা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর করার দুই দিন আগে, তার প্রশাসন বৈশ্বিক বাণিজ্য অংশীদারদের নীতিমালা ও বিধিনিষেধ সম্পর্কিত বিশদ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যা মার্কিন রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।  

সোমবার (৩১ মার্চ) মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস ইউএসটিআর বার্ষিক ন্যাশনাল ট্রেড এস্টিমেট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের গড় শুল্ক হার এবং অশুল্ক বাধাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ম, নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ এবং সরকারি ক্রয় নীতির মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  

ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক কী?

বুধবার (২ এপ্রিল) ঘোষিত হতে যাওয়া ট্রাম্পের নতুন পারস্পরিক শুল্ক নীতির লক্ষ্য-

# যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করে, তাদের বিরুদ্ধে একই মাত্রার শুল্ক আরোপ করা
# অশুল্ক বাণিজ্য বাধার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া

গত সপ্তাহে ট্রাম্প ইতোমধ্যে ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন গাড়ি আমদানির ওপর। এই পদক্ষেপ মূলত দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নেওয়া হলেও, এটি নতুন করে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কাও তৈরি করছে।  

ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, "আধুনিক ইতিহাসে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এতটা স্পষ্টভাবে আমেরিকান রপ্তানিকারকদের মুখোমুখি হওয়া বৈদেশিক বাণিজ্য বাধাগুলো চিহ্নিত করেননি, যতটা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।"

তিনি আরও যোগ করেন, "ট্রাম্প প্রশাসন এই অবিচার এবং একতরফা বাণিজ্য নীতিগুলো দূর করতে কঠোর পরিশ্রম করছে, যাতে আমেরিকান ব্যবসা ও শ্রমিকরা বিশ্ববাজারে সমান সুযোগ পায়।"

তবে, ৩৯৭ পৃষ্ঠার এই বিশাল রিপোর্ট ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনার ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।  

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল্য সংযোজন কর নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি দাবি করেছেন, "ইইউ দেশগুলোর সংগ্রহ করা ভ্যাট কার্যত আমদানি শুল্কের মতো কাজ করে এবং রপ্তানির সময় এই কর ফেরত দেওয়ায় এটি একটি রপ্তানি ভর্তুকির মতো আচরণ করে।"

তবে, ইউএসটিআর-এর রিপোর্টে ইইউ-র নীতিগুলোতে ভ্যাট-কে বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। বরং ইইউ-এর ডিজিটাল সার্ভিস কর এবং নতুন কার্বন ট্যাক্স-এর ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে।  

অন্যদিকে, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্ষেত্রে ভ্যাট নীতিমালাকে মার্কিন পণ্যের জন্য বাধাস্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চীন কিছু নির্দিষ্ট পণ্য রপ্তানিতে ভ্যাট ফেরত দিয়ে একপ্রকার ভর্তুকি দিচ্ছে, যা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত সুবিধা তৈরি করছে।  
খাদ্য ও কৃষিপণ্য সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা

এই রিপোর্টে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ও সরকারি বিধিনিষেধ মার্কিন পণ্যের জন্য কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-  

# ইইউ-তে মার্কিন জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসলের অনুমোদনে দীর্ঘ বিলম্ব
# নির্দিষ্ট কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ থাকার কারণে কৃষিপণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা

এছাড়া, ইইউ-তে পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ন্যূনতম কন্টেন্ট সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা মার্কিন রপ্তানির জন্য অযৌক্তিক বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে।  
কানাডার দুগ্ধ ও কৃষিপণ্য নীতি

ইউএসটিআর রিপোর্ট কানাডার সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে। কানাডার দুগ্ধ, মুরগি এবং ডিম শিল্প উচ্চ শুল্ক ও কোটার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে রক্ষা করে।

# চিজ আমদানির ওপর ২৪৫% শুল্ক
# মাখনের ওপর ২৯৮% শুল্ক

ট্রাম্প এর আগেও কানাডার দুগ্ধ নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, "তারা যদি এই শুল্ক না কমায়, তবে তাদের পণ্যও একই মাত্রার শুল্কের সম্মুখীন হবে।"

বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি: ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক নীতি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়বে।  

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রভাব: যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এটি দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করবে, তবে এতে মূল্যস্ফীতি ও আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: ইইউ, কানাডা ও অন্যান্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।  

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন বাণিজ্য নীতি বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে চলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য: অন্য দেশগুলোর শুল্ক ও নীতিগুলোতে ভারসাম্য আনা।  
সম্ভাব্য সমস্যা: নতুন বাণিজ্য সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে, যা অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়াতে পারে।  

আরবি/এসএস

Link copied!