মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জোট আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহিম।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ব্যাংককে আমি মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এবং বিরোধী জোট নাগ-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছি। উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে।’
আনোয়ার আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই সমঝোতার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় সংঘর্ষ এড়ানো যাবে, যাতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালানো সম্ভব হয়। যদি নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়, তাহলে সব মানবিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে।’
ভূমিকম্পই যুদ্ধবিরতির সূত্রপাত
গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারে ৭.৭ ও ৬.৭ মাত্রার দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। এতে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ হয়। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, প্রাণ হারান ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ।
এই বিপর্যয়ের পর ২ এপ্রিল সামরিক জান্তা ২০ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, যেন উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ নির্বিঘ্নে চালানো যায়।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং তার দল এনএলডি। এরপর থেকেই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলেও, দমন-পীড়নের মুখে গড়ে ওঠে সশস্ত্র প্রতিরোধ- যার নেতৃত্ব নেয় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট।
তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতে মিয়ানমার কার্যত গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে রয়েছে। চীনসহ বেশ কিছু দেশ সংঘাত নিরসনের উদ্যোগ নিলেও এখনো স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি।
আনোয়ার ইব্রাহিম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আসিয়ান সদস্য হিসেবে আমাদের উচিত মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। তবে এই অংশগ্রহণ যেন সামরিক সরকার নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার হাতিয়ার না বানায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’
সূত্র: রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :