পবিত্র গুড ফ্রাইডের দিনে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর ব্যাপক হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল), ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে এই ভয়াবহ হামলা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের অধিকাংশই গাজা সিটি ও উত্তর গাজার বাসিন্দা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বর্তমানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা শহরের শাবৌর ও তেল আস সুলতান এলাকায় সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে এবং সেখান থেকেই সর্বশেষ এই হামলা পরিচালিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় সূত্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যার মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ জানিয়েছেন, ‘হামাসকে পরাজিত করা ও জিম্মিদের মুক্তি- এই লক্ষ্য পূরণের পথেই এগোচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।’
গতকাল গুড ফ্রাইডের দিনে গাজার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষজন একান্তভাবে তাদের ধর্মীয় আচার পালন করেছেন। স্থানীয় গির্জাগুলোতে ছিল না উৎসবের কোনো ছোঁয়া, বরং ছিল শোক ও ভয়। গাজার একটি চার্চ থেকে ইহাব আয়াদ বলেন, ‘এ বছর আমার কোনো আত্মীয় বা বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়নি। কারণ, ইসরায়েলি হামলায় তাদের অনেকেই নিহত বা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।’
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে হামাস হঠাৎ করে ইসরায়েলে প্রবেশ করে হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতিশোধমূলক অভিযান।
চলমান হামলায় গত এক মাসে আরও দেড় হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এখনো অন্তত ৩৫ জন জিম্মি জীবিত আছেন। আইডিএফ জানিয়েছে, তাদের উদ্ধারে অভিযান চলবে।
এদিকে, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) ইসরায়েলের এই অভিযানের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত অভিযান থামবে না।
সূত্র: আলজাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :