ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ৯০

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৪, ০৩:৫৪ এএম

যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ৯০

ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে শিশুদের নাচের ক্লাসে ছুরি হামলার তিন শিশু নিহত হন। এই  ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন ‘উগ্র ইসলামপন্থি অভিবাসী’  অনলাইনে দ্রুত এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন শহরে শত শত অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারী দাঙ্গা শুরু করেন।

শনিবার (৩ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের কট্টর-ডানপন্থী গোষ্ঠী আয়োজিত বিক্ষোভের সময় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার ৯০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাল, লিভারপুল, ব্রিস্টল, ম্যানচেস্টার, স্টোক-অন-ট্রেন্ট, ব্ল্যাকপুল এবং বেলফাস্ট সহ বেশ কয়েকটি শহরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দাঙ্গাকারীরা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, দোকান লুট করেছে এবং কিছু এলাকায় পুলিশকে আক্রমণ করেছে। আবার কিছু কিছু স্থানে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে শিশুদের নাচের ক্লাসে ছুরি হামলায় তিন শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন ‍‍`উগ্র ইসলামপন্থি অভিবাসী‍‍`— অনলাইনে দ্রুত এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন শহরে শত শত অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারী দাঙ্গা শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এ ধরনের বক্তব্য প্রচারকারীদের মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনীকে পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ছুরি হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর অ্যাক্সেল রুডাকুবানার জন্ম ব্রিটেনে। কিন্তু অভিবাসনবিরোধী ও মুসলিমবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় সেটি এখন সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে রূপ নিয়েছে। অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ও বর্ণবাদবিরোধী গোষ্ঠী পরষ্পরের মুখোমুখি হওয়ায় বিশ্ঙ্খৃলা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। রোববারেও (৪ আগস্ট) দাঙ্গা অব্যাহত থাকে এবং বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছোঁড়েন। লিভারপুলের ওয়ালটনে একটি লাইব্রেরিতে আগুন লাগানো হয়েছে এবং দাঙ্গাকারীরা দমকল কর্মীদের এটি নিভানো থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। এসময় দোকানপাট লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় ওয়ালটন থেকে ২৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সহকারী প্রধান কনস্টেবল জেনি সিমস সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সাউথপোর্টে সাম্প্রতিক ট্র্যাজেডির পরে এটি অগ্রহণযোগ্য।

তবে বিক্ষোভ চরম মাত্রায় পৌছালেও যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ব্রিস্টল ও বেলফাস্ট-এর মতো শহরে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের বারবার সংঘর্ষ হয়েছে।

এসময় বেলফাস্টে কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অন্তত একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। সাউথপোর্ট সহ যুক্তরাজ্য জুড়ে কমপক্ষে ৩০টি কট্টর-ডানপন্থী বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭০জন অতিরিক্ত প্রসিকিউটরকে গ্রেপ্তারকৃতদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শ্যাডো হোম সেক্রেটারি জেমস ক্লেভারলি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে সহিংসতার মোকাবিলায় আরও জোরদারভাবে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ সপ্তাহের শুরুতে কিয়ার স্টারমার পুলিশকে তথ্য আদান-প্রদান এবং সহিংস গোষ্ঠী মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন।
 

আরবি/জেডআর

Link copied!