ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
চলছে বিধানসভা ভোট

কাশ্মীরে নির্বাচনে লড়ছেন ১০ সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৪:২১ পিএম

কাশ্মীরে নির্বাচনে লড়ছেন ১০ সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’

ছবি: সংগৃহীত

ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরে বিধানসভা ভোটগ্রহণ চলছে। দীর্ঘ এক দশক পর প্রথমবারের মতো নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন কাশ্মিরিরা। তিন দফা ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করা হবে ৮ অক্টোবর। নির্বাচনে ১০ জন সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ প্রার্থী হয়েছেন। এই প্রার্থীরা কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ১০ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’র একজন হাফিজ মোহাম্মদ সিকান্দার মালিক। ৩৭ বছর বয়সি মালিক বর্তমানে জামিনে আছেন। যেদিন মনোনয়ন দাখিল করতে গিয়েছিলেন, সেদিনও তার পায়ের গোড়ালিতে জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো ছিল। ২০১৯ সালে ‘সন্ত্রাসবাদের’ দায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সিকান্দার মালিকসহ কয়েক ডজন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’কে সেই সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য পাঠানো হয়েছিল।

এদিকে সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’রা বলছেন, তারা নির্বাচিত হলে জম্মু ও কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ফিরিয়ে আনবেন।

তবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চলতি মাসেই বলেছেন, ঐ মর্যাদা ‘এখন ইতিহাস এবং কেউ এটি ফিরিয়ে আনতে পারবে না’।

অন্যদিকে মালিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন, কারণ তার দল জামাত-ই-ইসলামীকে ২০১৯ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দলটি জঙ্গিবাদের সমর্থন করে বলে নতুন দিল্লির অভিযোগ।

রয়টার্সকে মালিক বলেন, তার প্রধান লক্ষ্য তার দলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন অভিযোগে বন্দি করে রাখা ব্যক্তিদের মুক্ত করা। ‘অন্য দলগুলো যেহেতু এসব নিয়ে কথা বলবে না, তাই আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই। নির্বাচিত হলে মানুষের ভালোর জন্য কাজ করবো,’ রয়টার্সকে বলেন তিনি।

কাশ্মীরের প্রধান দুটি দল হলো ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। ১৯৪৭ সাল থেকে মূলত এই দুটি দলই পালা করে কাশ্মীর শাসন করে আসছে। দুটি দলই জম্মু ও কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অঙ্গীকার করেছে।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আব্দুল্লাহ, যিনি তার দাদা ও বাবার মতোই জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ২০১৯ সালে মোদি সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত বদলে কাশ্মীরের ‘নিজের পরিচয় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন’।

কাশ্মীরের রাজনীতিতে মোদির বিজেপি দলের উল্লেখযোগ্য অবস্থান নেই। তাই ১৯৯৬ সালের পর এবারই প্রথম ভারতের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি কাশ্মীরে কোনো প্রার্থী দেয়নি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে ৯০ আসনের মধ্যে ৬২টিতে প্রার্থী দিয়েছে দলটি।

কেন্দ্রে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ইস্যুতে নিশ্চুপ। তবে বিধানসভা নির্বাচনে তারা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোট গঠন করেছে। কাশ্মীরের মূল দুই দলের বাইরে সংগঠিত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতা আব্দুল রশিদ শেখ এই দলের নেতা। গত সাধারণ নির্বাচনে তিনি হেভিওয়েট প্রার্থী কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহকে হারিয়েছেন।

আরেক সাবেক জামাত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়ার আহমাদ রেশি বলেছেন, ন্যায়বিচারের জন্য লড়ার একমাত্র উপায় নির্বাচন।

আরবি/জেআই

Link copied!