জামায়াত-বিএনপির প্রেম বালির বাঁধ

মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৩:১৯ এএম

জামায়াত-বিএনপির প্রেম বালির বাঁধ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির এক সময়ের বন্ধু জামায়াতের কর্মকাণ্ডে আস্থাহীনতা হয়ে পড়েছে দলটি। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে একে অপরের প্রতি সন্দেহ-অবিশ্বাস থেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন বিবাদে রূপ নিয়েছে।

এর জের ধরে বাড়ছে পাল্টাপাল্টি বক্তৃতা-বিবৃতি। বিএনপির সঙ্গে তার এক সময়ের মিত্র জামায়াতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল কয়েক বছর ধরে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনের পতনের আন্দোলনে তারা এক থাকলেও কিছু দিনের মধ্যেই দল দুটির সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়তে থাকে।

সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে এই প্রশ্নে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিবাদে জড়ায় বিএনপি-জামায়াত। এরই মাঝে জাতীয় সংসদের বিভিন্ন আসনে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় প্রার্থীও ঘোষণা করে।

দলটির এমন তৎপরতায় আস্থার অভাব ও সন্দেহ বেড়ে যায় বিএনপিতে। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে দল দুটি।

বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন চায় না। আর জামায়াত আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাইছে।

দুই দলের মধ্যে এমন সাংঘর্ষিক বক্তব্য ও পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে বেকায়দায় পড়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। 

সরকারদলীয় একটি সূত্র জানায়, জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে যে দা-কুমড়া সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তাতে সমঝোতা ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে গেলে দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিএনপির পল্টন অফিসের একটি 

সূত্র জানায়, সম্প্রতি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে প্রকাশ্যে সংঘর্ষের ঘটনা আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে।

বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শের কারণেও বিএনপি জামায়াতের কর্মকাণ্ডকে সন্দেহের চোখে দেখছে।

নানা ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াতের বিবাদ এমন এক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যে, দল দুটির নেতারা এখন কোনো না কোনো বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন।

সংস্কার প্রশ্নে বিবাদের শুরু: অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই বিএনপি ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দাবি করে আসছে।

আর জামায়াত দাবি করে আসছিল ‘সার্বিকভাবে সংস্কারের পরই নির্বাচন’। দলটি অবশ্য সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে এখন নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলছে।

তবে জামায়াত নির্বাচনের সময় নিয়ে বিএনপি থেকে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। জামায়াত বলেছে, প্রয়োজনীয় সংস্কারের যতটা সময় প্রয়োজন হবে, সেই সময় সরকারকে তারা দেবে। 

আর বিএনপির অবস্থান হচ্ছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।

অন্যদিকে ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে পারে’ এমন খবরে নতুন করে বিরোধে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতারা।

যদিও সরকার বা নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য এখনো আসেনি।

দেশের সচেতন মহল ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই দলের মধ্যে যে তিক্ততা দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সরকার বেকায়দায় পড়েছে।

তা ছাড়া এই দুই দলের ক্ষেত্রে সরকার যদি শক্ত অবস্থানে না থেকে নির্বাচন দেয় তাহলে দেশজুড়ে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী না হতে পারে সেজন্যই জামায়াত নির্বাচন প্রলম্বিত করতে নানা ধরনের তৎপরতা শুরু করেছে। 

এ জন্য জামায়াতের কর্মকাণ্ড সন্দেহের চোখে রেখে বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে তৎপরতায় বাড়াচ্ছে।

যদিও এসব বিষয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আমাদের বিরোধ বা দূরত্ব নেই। বরং আমরা দলীয় কাজ চলমান রেখেছি। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার এ বিরোধের মূল কারণ হলো নির্বাচন।

বিএনপি ভাবছে জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে বা তারা অন্য ধরনের কিছু করতে পারে। আবার জামায়াত মনে করছে সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেটি আর জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী বাস্তবায়ন হয় কি না। এমন কিছু বিষয়েই দল দুটির চিন্তায় ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে।

এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের একটি বক্তব্যের জের ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিএনপি নেতারা। তিনি বলেছিলেন, ‘একদল চাঁদাবাজ পালিয়েছে, আরেকদল চাঁদাবাজিতে লেগে গেছে’।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের আশকারা দিচ্ছে জামায়াত, অভিযোগ বিএনপির: বিএনপির একটি বড় অংশ মনে করে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা ও সংগঠক প্রায়ই বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বকে ঘিরে যেসব ‘তীর্যক’ মন্তব্য করে থাকেন তাতে জামায়াতের আশকারা রয়েছে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন করে করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের আশকারা দিচ্ছে জামায়াত। তাদের শেল্টারে ছাত্ররা বিএনপি নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে। 

গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়েও ভিন্ন অবস্থান: জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে বিএনপির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও তাদের ঘনিষ্ঠ জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা যে প্রশ্ন তোলেন সেটি জামায়াতের ইন্ধনেই হচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপির অনেকেই।

বিএনপির দাবি, ছাত্রদের আন্দোলনে চূড়ান্তভাবে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এর ভিত্তি তৈরি হয়েছে তারেক রহমানের নেতৃত্বে তাদের গত ১৫ বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে।

আবার আন্দোলনকারী ছাত্রদের দল গঠনের বিষয়ে বিএনপি সমালোচনা করে বলেছে, ক্ষমতায় থেকে দল গঠনের উদ্যোগ জাতি মেনে নিবে না।

কিন্তু জামায়াত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বিএনপির অনেকের ধারণা, ছাত্রদের এ দল গঠন প্রক্রিয়াকেও উৎসাহিত করছে জামায়াত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতি উদারতা দেখিয়ে বিএনপি উপহার হিসেবে মুনাফেকি পেয়েছে।

দলের জ্যেষ্ঠ মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির ঘাড়ে ভর করে টিকে থাকা জামায়াত এখন সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নে আছে।

তা ছাড়া দেশের মানুষ এখন নির্বাচন চায়, তারা জনগণের সরকার চায়। দেশের এই ক্লান্তিকালে অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া জরুরি বলে তার মত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব বলেছেন, সম্প্রতি জামায়াতের কর্মকাণ্ডে আমাদের সন্দেহ ও আস্থাহীনতা দেখা গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের এক মুখপাত্র জানান, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ভারতের আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি গ্রহণ করেছে। আর এ কারণেই সম্ভবত বিএনপিতে গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াতের পাল্টাপাল্টি এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে সচেতন মহল মনে করছেন, জামায়াত সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সমর্থন করায় বিএনপির মধ্যে জামায়াত বিরোধিতা আরও শক্ত আকার ধারণ করেছে।

এর মধ্যেই আগামী নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের প্রায় সবটিতেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াত।

তারা বলছেন, জামায়াত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু তারা আগে সংস্কার চাইছে কারণ তারা মনে করে নির্বাচনের পর সংস্কার বাস্তবায়ন হলে সেখানে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাব ফেলতে পারে।

আগে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি: জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় না বিএনপি। দলটির এই অবস্থানের কথা অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তারা ইতিমধ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। 

স্থানীয় নির্বাচন বিএনপি কেন আগে চাচ্ছে না এ বিষয়ে শীর্ষ নেতারা বড় দাগে তিনটি কারণের কথা জানিয়েছেন। দলটির নেতাদের মতে, এর প্রধান কারণ দলীয় প্রতীকবিহীন স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার জন্য একে বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজে লাগাতে পারে। এতে দেশজুড়ে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

যেটি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এটি সরকারের যে মূল ফোকাস জাতীয় নির্বাচন, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি জাতীয় নির্বাচন আগে; তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু বলেছেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো অন্তর্বর্তী সরকার এসে এই ধরনের নির্বাচন করেনি। আমরাও স্থানীয় নির্বাচন চাই না; আগে জাতীয় নির্বাচন চাই।’

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ‘দুটো নির্বাচন একসঙ্গে করা যায় কি নাÑ এতে কেমন সময় লাগতে পারে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সবকটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন ধাপে ধাপে করতে গেলে এক বছর সময় লেগে যায়।

এভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করতে হলে জাতীয় নির্বাচনের সময় পিছিয়ে যাবে। জাতীয় নির্বাচন এখন নির্বাচন কমিশনের অগ্রাধিকার।

তাই জাতীয় নির্বাচন নিয়েই এ মুহূর্তে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের, সেটা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’

বিএনপির নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন করা। তা ছাড়া এ ধরনের সরকারের অধীনে অতীতে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার নজিরও নেই।

আর ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এর যৌক্তিকতা নেই। কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে সরকারের মূল যে লক্ষ্য, সেখান থেকে বিচ্যুত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।

ইউনিয়ন থেকে শুরু করে পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন এগুলো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। তা ছাড়া এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে সেটা ‘পতিত’ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনেরও একটা মাধ্যম হতে পারে। কেননা, এই নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সেক্ষেত্রে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রার্থী হলে তাদের যেমন ঠেকানো যাবে না, তেমনি তৃণমূলে ব্যাপক হাঙ্গামা-সংঘর্ষও হতে পারে। যেটা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

তখন পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় নির্বাচনেও। সুতরাং সরকার এ ধরনের নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে তাদের মূল উদ্দেশ্যই ভেস্তে যেতে পারে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, যেটি সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে।

এর মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের কথা মাথায় আনা যাবে না। কারণ পতিত আওয়ামী লীগ গর্তের ভেতর মাথা লুকিয়ে রেখেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে তারা গর্ত থেকে মাথা বের করবে।

তাই আওয়ামী লীগকে সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না চাওয়ার বিষয়টি আমাদের দলীয় নীতিগত সিদ্ধান্ত।

আইনি এবং সাংবিধানিক বিষয়াবলি বিবেচনায় নিয়ে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা যদি অগ্রাধিকার ঠিক না করি, দেশে একটি ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।

তা ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। দেশে এই ধরনের সরকারের অধীনে অতীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নজির নেই।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সম্প্রতি আমরা লক্ষ করছি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি জামায়াত-বিএনপির দ্বন্দ্ব অনেকটা স্পষ্ট। তবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচন আগে না হলে দেশজুড়ে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। এই দুই দলের সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ডের কারণে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও সরকারকে।

তিনি বলেন, সরকারের উচিত এসব বিষয়ে আরও কঠোর হওয়া। অন্যথায় সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!