ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

তবে কি মধ্যপ্রাচ্য বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে!

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৪, ০৯:৪২ এএম

তবে কি মধ্যপ্রাচ্য বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে!

ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইল-ইরান সংঘাতে উত্তেজনা বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যে। এর ফলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতেও যুদ্ধের আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। ইসরাইলি ভূখণ্ডে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এদিকে তেল আবিবের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছে ওয়াশিংটন। অপরদিকে তেহরানও পালটা হামলার হুমকি দিয়েছে। ফলে যুদ্ধের ঝুঁকির মধ্যে পড়বে পুরো মধ্যপ্রাচ্য। এমনকি এর প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে।

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত বিষয় ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের। লেবাননে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লার মৃত্যুর বদলা নিতে ইসরাইলে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে তেহরান। গোটা ইসরাইলজুড়ে আছড়ে পড়ে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল। নিশানা করা হয়েছিল মোসাদের সদর দপ্তরকেও। কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পায় সেটি। ইরানের ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানায়নি নেতানিয়াহুর সরকার। তবে কিছু স্কুল এবং ভবন ধ্বংসের চিহ্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নেতানিয়াহু বলেছেন, এর ফল ইরানকে পেতে হবে। ইরানে এবার যে ইসরাইল পালটা হামলা চালাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সাবেক ইসরাইলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আভি মেলামেদ বলেছেন, ‘ইরানের হামলা হলো ইসরাইলকে বড় ধরনের পালটা হামলার জন্য উস্কানি দেওয়া। আমরা ইরানি লক্ষ্যবস্তু গুলোতে উল্লেখযোগ্য ও তাৎক্ষণিক ইসরাইলি জবাব দেখতে পাবো’।

বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইলের এখনকার কৌশল হলো একসঙ্গে দু’ভাবে এগুনো: হত্যা, বিমান হামলা ও প্রতিরোধ- যার মাধ্যমে ইরান ও ছায়াশক্তিগুলোকে বুঝিয়ে দেয়া যে ইসরাইলে আঘাত করলে আরও বেশি শক্তির মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু ইসরাইলের প্রতিশোধ কেমন হতে পারে? ইরানে হামলার জন্য দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা ইসরাইলের হাতে থাকবে। এর প্রতিরক্ষা প্রধান এখন পর্যালোচনা করে দেখবেন কখন ও কীভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রটিতে আঘাত করবেন। এর মধ্যে অবশ্যম্ভাবী সামরিক লক্ষ্যবস্তু হবে স্থলভাগে যেখান থেকে মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। সুতরাং ফায়ারিং এর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র যেখানে রাখা হয়েছে শুধু সেই জায়গা নয় বরং কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, এমনকি রিফুয়েলিং সেন্টারগুলোও এর আওতায় থাকবে। এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দিয়েছে যারা এবং যারা এটি পরিচালিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ইরানের অভ্যন্তরেই গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে পারে ইসরাইল। আর যদি দেশটি আরও বেশি কিছু করতে চায় তাহলে তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করতে পারে।

এরই মধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচন নিয়ে দিচ্ছেন একের পর এক বার্তা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদনে জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, এই দুই ব্যক্তি আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব আগুনে জ্বলছে; নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের কোনো নেতৃত্ব নেই, দেশ পরিচালনার কেউ নেই। জো বাইডেন আমাদের একজন অস্তিত্বহীন প্রেসিডেন্ট। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও এখানে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। প্রশাসনে ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করতে কেউ দায়িত্বে নেই এবং এটাও স্পষ্ট নয় কে বেশি বিভ্রান্ত: বাইডেন না কমলা।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি সভার শুরুতে দেওয়া ভাষণে গুতেরেস বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ একটি পূর্ণমাত্রার ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মুখোমুখি। এখনই সময় তাঁদের খাদের কিনার থেকে ফিরিয়ে আনার।

এদিকে ইতিমধ্যে ইরানের গোয়েন্দারাও জানিয়েছেন, ইসরাইল যে কোনো সময় পরমাণু ও তেল কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে। তবে যে পথেই এগুক ইসরাইল, এতেও ইরানের পালটা হামলা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় কোনো প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করলে ইসরাইলের সব স্থাপনায় হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। ফলে এর মাধ্যমে দেশ দুটি হামলা ও প্রতিশোধে চিরস্থায়ী এক চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়বে। যদিও সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, ইরান বড় ধরনের কোনো যুদ্ধে জড়াতে চাইবে না।

আরবি/জেআই

Link copied!