আবারও জাতীয় ঋণসীমা ছুঁয়ে ফেলার পর্যায়ে চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মঙ্গলবার মার্কিন সরকার ৩৬ ট্রিলিয়ন বা ৩৬ লাখ কোটি ডলারের জাতীয় ঋণসীমা ছুঁয়ে ফেলবে। এরপর সরকারের ব্যয় অব্যাহত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে আগেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো। খবর সিএনএনের।
জাতীয় ঋণসীমায় পৌঁছে যাওয়ার অর্থ হলো, কংগ্রেস সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি হওয়া। মার্কিন সরকার এখন পর্যন্ত কখনো ঋণখেলাপি হয়নি। সেই বাস্তবতা যেন তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে কংগ্রেস সদস্যদের এখন দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ঋণখেলাপি হয়ে গেলে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা রীতিমতো ওলট-পালট হয়ে যাবে।
জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, আগামী ১৪ মার্চ পর্যন্ত এই বিশেষ ব্যবস্থায় চলতে হবে। এই বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে আছে গোপন হিসাববিজ্ঞান, যেসব বিষয় সাধারণত জনসমক্ষে আসে না।
ক্যাপিটল হিল রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এই ঋণসীমার বিষয়টি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ঐকমত্য নেই। বেশ কিছু বড় অ্যাজেন্ডা তাদের আছে। কংগ্রেসকেও তারা দলীয় ধারায় প্রভাবিত করতে চায় সীমান্ত নিরাপত্তা, জ্বালানি, কর হ্রাস—এসব বিষয়ে।
এ ছাড়া ২০২৫ সালের আর্থিক বিল পাস করতে হবে। অক্টোবরের ১ তারিখে শুরু হওয়া এই বিশেষ ব্যবস্থার মেয়াদ ১৪ মার্চ শেষ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণসীমা ২০২৩ সালের জুন মাসে স্থগিত করা হয়। এর মেয়াদ ছিল ১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার আগে দেশটির জাতীয় ঋণসীমা ছিল ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বা ৩১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৩৯ সালে প্রথম জাতীয় ঋণসীমা নির্ধারিত হয় ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর এখন পর্যন্ত ১০৩ বার এই ঋণসীমা বাড়াতে হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশটির জাতীয় ঋণ অনুমোদিত সীমার ৯৮ শতাংশে উঠে যায়, ২০০১ সালে যা ছিল মাত্র ৩২ শতাংশ।
২০১৬ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ধনীদের করছাড় দিয়েছিলেন। এরপর কোভিডের সময় মানুষকে প্রণোদনা দিতে মার্কিন সরকারকে বিপুল পরিমাণে ঋণ নিতে হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক বছরে দেশটির ঋণ অনেকটা বেড়েছে।
এখন ট্রাম্প আবার ধনীদের ছাড় দিলে রাজস্ব আয় কমবে। সেই চিন্তা থেকেই ট্রাম্প ঋণসীমা উঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।
আপনার মতামত লিখুন :