মধ্য ইউরোপের দেশ সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুসেভিচ পদত্যাগ করেছেন। রেলস্টেশনের ছাদ ধসে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পর সারাদেশব্যাপী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
মিলোস বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি আর জটিল না করতে এবং সমাজে উত্তেজনা আর না বাড়ানোর জন্য তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত নভেম্বরে সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদে একটি রেলস্টেশনের কংক্রিটের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হন। এই মৃত্যুর ঘটনার পর সার্বিয়ায় ব্যাপক ও দীর্ঘস্থায়ী বিক্ষোভ শুরু হয়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। এই দুর্ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত এবং নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতি ও নজরদারির অভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন মানুষজন।
দেশটির শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা প্রতিদিন সড়ক অবরোধ এবং কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অবরোধ চালিয়ে গেছে।
গত সপ্তাহে সার্বিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ ধর্মঘটে অংশ নেয়। সেই সময়ে বেলগ্রেডে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেয়। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীরা সার্বিয়ার রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক চৌরাস্তা ২৪ ঘণ্টার জন্য অবরোধ করে।
সেই সন্ধ্যায় সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুসিক ঘোষণা দেন যে তিনি বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগে ক্ষমা করবেন। একই সঙ্গে তিনি বড় ধরনের সরকার পুনর্গঠনের কথা বলেন এবং জানান, তিনি আশা করছেন অর্ধেকের বেশি মন্ত্রীকে বদলানো হবে।
মিলোস ভুসেভিচ ক্ষমতাসীন সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতা। তিনি এক বছরেরও কম সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নোভি সাদের মেয়র ছিলেন।
নোভি সাদের দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক ডজনের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গোরান ভেসিকও আছেন। তিনি ঘটনাটির কয়েক দিনের মধ্যেই পদত্যাগ করেছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :