মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অবৈধ এবং ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ট্রাম্প এই আদেশে সই করেন। এই আদেশের আওতায়, আইসিসির তদন্তে সহায়তাকারী মার্কিন নাগরিক বা তাদের মিত্রদের ওপর আর্থিক এবং ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে।
এটি এমন একটি সময়ে হয়েছে, যখন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটন সফরে রয়েছেন।
গত নভেম্বরে আইসিসি গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে ইসরায়েল সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। একই সময়ে হামাসের এক কমান্ডারের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
এটি এমন এক সময় হয়েছে, যখন মার্কিন সিনেটের ডেমোক্র্যাটরা আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের রিপাবলিকান-সমর্থিত প্রস্তাব আটকে দিয়েছিলেন, যা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার প্রতিবাদে আনা হয়েছিল।
তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আইসিসি এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে এক সূত্র জানিয়েছে, আইসিসি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল এবং ইতোমধ্যে তাদের কর্মীদের তিন মাসের বেতন অগ্রিম প্রদান করেছে যাতে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তাদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত না ঘটায়।
এটি আইসিসির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নিষেধাজ্ঞা নয়। ২০২০ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা ও তার এক সহযোগীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১২৫টি। এই আদালত যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা এবং আগ্রাসনের অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়।