যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় ঢাকার অনুরোধ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় ঢাকার অনুরোধ

ছবি: সংগৃহীত

সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেছেন যে, ওয়াশিংটন এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যা বাংলাদেশের জনগণের ক্ষতির কারণ হতে পারে। আর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, বাংলাদেশ তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের বাংলাদেশ নীতির ওপর নির্ভর করবে।

দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দেন। ২০২৩ সালে ১৮০টি দেশের মধ্যে সহায়তাপ্রাপ্তদের তালিকায় বাংলাদেশের নাম শীর্ষে ছিল।

তবে গত ২৫ জানুয়ারি ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ২২ দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বাংলাদেশ, ভারতসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ঢাকা মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “মার্কিন সহায়তা আপাতত স্থগিত রয়েছে। আমরা আশা করি, মার্কিন সরকার এটি পুনর্বিবেচনা করবে। যদি কোনো অনিয়ম বা অভিযোগ থাকে, তাহলে তা সমাধান করা একটি ব্যাপার। কিন্তু পুরো সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া আরেকটি বিষয়। আমরা আশা করি, তারা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যা আমাদের জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধের প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোস্তফা সারোয়ার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও অন্যান্য নীতির সামঞ্জস্য কীভাবে রাখা হচ্ছে, সেটাই প্রধান বিষয়। যদি সেখানে কোনো অমিল থাকে, তবে সহায়তা পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন যেকোন সরকার ক্ষমতায় আসলে সহায়তা নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে- এটাই স্বাভাবিক। তাই বিশ্লেষকরা এককভাবে কোনো দেশের ওপর নির্ভর না হয়ে বিকল্প পথ খুঁজে বের করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “এ মুহূর্তে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে আমরা টিকে থাকতে পারি।”

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “আমেরিকা চিরকাল সহায়তা দিতে থাকবে, এমন ভাবনা আর বাস্তবতা নয়। ফান্ড বাড়ানোর জন্য সরকারকে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।”

গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন খাতে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।

আরবি/এফআই

Link copied!