জেলেনস্কির পাশে বিশ্বনেতারা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৫, ১২:২০ পিএম

জেলেনস্কির পাশে বিশ্বনেতারা

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর মধ্যে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠক যেন এক ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। তর্ক-বিতর্ক ও উত্তেজনাপূর্ণ এই বৈঠক শেষে যে যৌথ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল তাও বাতিল হয়েছে। আর এ ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং ইউক্রেনের পক্ষে তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ অবৈধ ও অযৌক্তিক এবং কানাডা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ মন্তব্য করেছেন, ইউক্রেনের জনগণের চেয়ে কেউ বেশি শান্তি চায় না এবং জার্মানি ও ইউরোপ ইউক্রেনের পাশে থাকবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাশিয়াকে আক্রমণকারী হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ইউক্রেন স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে এবং তাদের সহায়তা ও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইউক্রেনের জন্য একটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য তাদের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, “অস্ট্রেলিয়া ইউক্রেনের পাশে থাকবে। কারণ এটি একটি গণতান্ত্রিক জাতির যুদ্ধ যা রুশ স্বৈরাচারী শাসন পরিচালিত করছে।”

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লারস লোকে রাসমুসেন এই বৈঠককে ইউক্রেনের জন্য ‘আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এমন পরিস্থিতি কেবল রাশিয়ার লাভে আসে।

রাশিয়ান সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেডভেদেভ ট্রাম্পের আচরণকে ‘একটি বর্বর তিরস্কার’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন ইউক্রেনের সাহস ও মর্যাদাকে সম্মান জানিয়ে বলেছেন, “আপনি একা নন, আমরা আপনার সঙ্গে আছি।”

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, “ইউক্রেন, তোমাদের পাশে আছে স্পেন।”

হাঙ্গেরিয়ান প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান কটাক্ষ করে বলেছেন, “শক্তিশালী মানুষ শান্তি আনে, আর দুর্বল নিয়ে আসে যুদ্ধ। আজ ট্রাম্প শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যদিও তা কিছু লোকের জন্য বোঝা কষ্টকর।”

নরওয়েজিয়ান প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যকে অবাস্তব ও অযৌক্তিক হিসেবে সমালোচনা করেছেন এবং ইউক্রেনের প্রতি নরওয়ের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

চেক প্রেসিডেন্ট পেট্র পাভেল বলেছেন, ইউরোপকে ইউক্রেনের জন্য আরও চেষ্টা বাড়াতে হবে।

এস্তোনিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগুস টাসাখনা বলেছেন, শান্তির একমাত্র বাধা হলো রাশিয়ার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড তাস্ক এক্সে বলেছেন, “প্রিয় ইউক্রেনীয় বন্ধুরা, তোমরা একা নও।”

জার্মান পার্লামেন্টের কনজারভেটিভ পার্টি-গ্রুপের ডেপুটি জোহান ওয়াডেফুল এক্সে বলেছেন, “হোয়াইট হাউসের দৃশ্যগুলো বেদনাদায়ক। কীভাবে আপনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের প্রেসিডেন্টকে আঘাত করতে পারেন? মুক্ত ইউরোপ কখনো ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না!”

ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও স্যালভিনি ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “শান্তির জন্য লক্ষ্য রাখো, এই যুদ্ধ বন্ধ করো!”

বিশ্বের নেতারা একে একে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করছেন।

আরবি/এফআই

Link copied!