ঢাকা সোমবার, ০৩ মার্চ, ২০২৫

মে মাসে বন্ধ হবে স্কাইপে

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ১০:০১ এএম
ছবিঃ সংগৃহীত

মাইক্রোসফট ২০১১ সালে ৮.৫ বিলিয়ন ডলারে কেনা ভিডিও কলিং সেবা স্কাইপ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। স্কাইপ ছিল সেই সেবা যা অনলাইনে মানুষের যোগাযোগের ধরন বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি), মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তারা মে মাসে স্কাইপ বন্ধ করে দিবে এবং এর কিছু সেবা মাইক্রোসফট টিমসের মধ্যে স্থানান্তরিত করবে, যা মাইক্রোসফটের প্রধান ভিডিও কনফারেন্সিং ও টিম অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম। স্কাইপ ব্যবহারকারীরা তাদের বিদ্যমান অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টিমসে লগ ইন করতে পারবেন।

বছরের পর বছর ধরে মাইক্রোসফট টিমসকে স্কাইপের ওপর প্রাধান্য দিয়েছে এবং ব্র্যান্ডটি বন্ধ করার সিদ্ধান্তটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান যোগাযোগ অ্যাপকে আরও সহজ এবং কার্যকরী করতে চাওয়ার প্রতিফলন। এ সময় প্রযুক্তির বাজারে মাইক্রোসফটকে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

২০০৩ সালে তালিন, এস্তোনিয়াতে একদল প্রকৌশলী স্কাইপ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এটি ছিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফোন কল করার প্রথম সেবা, যা ল্যান্ডলাইন ফোনের বদলে VOIP প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল। ২০০৫ সালে ইবের মাধ্যমে স্কাইপের ভিডিও কলিং ফিচার যুক্ত করা হয়।

নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক বারবারা লারসন বলেন, “এটি এমন একটি প্রযুক্তি ছিল, যা শুধু বড় কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজারদের জন্যই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষদেরও একে অপরের সঙ্গে ভিডিও কলিং করার সুযোগ দেয়।"

স্কাইপ ব্যবহারকারীরা আন্তর্জাতিক ফোন কলের ব্যয় এড়িয়ে নিজেদের কর্মজীবনকে সহজতর করতে পারত, এবং এটি শুরুতেই স্টার্টআপ ও ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও সাধারণ মানুষের জন্যও লাভজনক ছিল।

২০১১ সালে মাইক্রোসফট যখন স্কাইপ কিনেছিল, তখন তার ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল প্রায় ১৭০ মিলিয়ন। তখন মাইক্রোসফটের CEO স্টিভ বলমার বলেছিলেন, "স্কাইপ এখন এমন একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে, যা ভিডিও ও ভয়েস কমিউনিকেশনের সঙ্গে প্রায় সমার্থক।"

স্কাইপ ২০১৭ সালে এখনও জনপ্রিয় ছিল, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন প্রেস কনফারেন্সের জন্য সাংবাদিকদের সাথে দূরবর্তীভাবে যোগাযোগ করতে এটি ব্যবহার করেছিল। এক মাস পর, মাইক্রোসফট তাদের টিমস প্ল্যাটফর্ম লঞ্চ করেছিল, যা মূলত অফিসে চ্যাট সেবার জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী স্ল্যাক টেকনোলজিসও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে, স্ল্যাক, টিমস, এবং অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্ম যেমন জুম ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পায়, কারণ মানুষ দূরবর্তী কাজের জন্য নতুন টুলস খুঁজে পাচ্ছিল। স্কাইপ তখন আর খুব জনপ্রিয় না হলেও, এটি দূরবর্তী যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে, তা কখনো ভুলে যাওয়া যাবে না।

বারবারা লারসন বলেন, “উচ্চমানের মিডিয়া মানুষদের সম্পর্ককে গভীর করতে এবং জটিল সমস্যা সমাধানে অনেক সাহায্য করতে পারে। এটি সবার জন্য উপলব্ধ হয়েছিল। এবং এই ছিল স্কাইপের বাস্তব বিপ্লবী ভূমিকা।”

সুত্রঃ এপি