গাজার মানুষদের জন্য শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক মিসরের রাফা সীমান্তে অপেক্ষা করছে, কিন্তু ইসরায়েল হঠাৎ করেই গাজায় ত্রাণ ও সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ, আবার অশান্ত হবে গাজা?
কাতারের মধ্যস্থতায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের প্রচেষ্টায় ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি গত ১ মার্চ শেষ হয়েছে। এর পরই ইসরায়েল গাজার জন্য সব ধরনের সাহায্য বন্ধের ঘোষণা দেয় এবং জানায়, হামাস যদি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণ না করে, তবে এর খেসারত দিতে হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গাজায় কোনো ত্রাণ বা পণ্য প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে মতভেদ
যুদ্ধবিরতি চলাকালে ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের বিরুদ্ধে বারবার চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে। হামাস একবার বন্দি মুক্তি বন্ধও করেছিল, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের পর তারা আবার বন্দি মুক্তি দেয়।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ প্রস্তাব দিয়েছিলেন, মুসলিমদের রমজান ও ইহুদিদের পাসওভারের সময় পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হোক। ইসরায়েল এতে রাজি হলেও হামাস এতে সম্মতি দেয়নি।
ইসরায়েল ও হামাসের পাল্টাপাল্টি অবস্থান
- ইসরায়েল: যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও ছয় সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে তারা আবার গাজায় হামলা চালাবে।
- হামাস: গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করাকে ‘ইসরায়েলের ব্ল্যাকমেল’ (চাপ প্রয়োগের কৌশল) বলে অভিহিত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি ও হামাসের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। হামাস রাজি না হলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।
হামাসের মুখপাত্র এর পাল্টায় বলেছেন, গাজায় ত্রাণ পাঠানো বন্ধের সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের আসল রূপ প্রকাশ করেছে। তারা চায়, জানুয়ারির চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।
গাজায় নতুন সংকট?
যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। গাজার মানুষদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তবে এখনো কেউ কার্যকর সমাধানের পথে এগিয়ে আসেনি।
সুত্রঃ বিবিসি, এএফপি