বিশ্ব রাজনীতিতে এক উত্তাল মুহূর্তে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যানস, এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির বৈঠকটি বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় ছিল একটি খনিজ চুক্তি, যা নাকি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে। তবে, বৈঠকটি শেষ হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে। হোয়াইট হাউজের সেই জাগজমকপূর্ণ কক্ষে যেন একটি অদৃশ্য দেয়াল উঠে যায় দুই পক্ষের মাঝে। এই পরিস্থিতি যেন মিলে যায় তিন বছর আগের একটি ভবিষ্যৎবাণীর সাথে। আজকের ইউক্রেন, গতকালের আফগানিস্তান - এই মন্তব্যটি সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামিনী এক টুইট বার্তায় স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন। তিনি পশ্চিমা সমর্থনকে "মরিচিকা" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। খামিনী লিখেছেন, "পশ্চিমারা তাদের অনুগত সরকারগুলোর পাশে আছে বলে মনে হলেও, সেটি একটি বিভ্রম মাত্র। ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি সেই শিক্ষাই দেয়।"
তিনি ওই টুইটে তিন বছর আগের একটি পোস্টও শেয়ার করেন, যেখানে লেখা ছিল, "আজকের ইউক্রেন, গতকালের আফগানিস্তান।" আফগান প্রেসিডেন্টরা আমেরিকার উপর নির্ভর করেছিলেন, কিন্তু শেষমেষ তারা একাই পড়ে গিয়েছিলেন। ২০২১ সালে, আফগানিস্তানে ঠিক এমনই একটি দৃশ্য দেখা গিয়েছিল।
২০ বছর ধরে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করার পর, একদিন হঠাৎ আমেরিকা ঘোষণা দেয়, "আমরা চলে যাচ্ছি।" এরপর যা ঘটেছিল, তা সবারই জানা। আফগানিস্তান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন, এবং কাবুল পতনের আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। কয়েকদিনের মধ্যেই তালেবান আফগানিস্তান দখল করে নেয়, আর আমেরিকার দেওয়া প্রতিশ্রুতির এক করুন সমাপ্তি ঘটে।
ইউক্রেন নিয়ে মিলে যাচ্ছে আয়াতুল্লাহ খামিনীর ভবিষ্যৎবাণী?
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আমেরিকা সফর ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি চেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো সামরিক সহায়তা পাবেন, কিন্তু ট্রাম্প পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, "চুক্তি করো, নইলে আমরা চলে যাচ্ছি।" ট্রাম্পের কথাগুলো যেন খামিনীর বক্তব্যের সত্যতা তুলে ধরছে। ট্রাম্প ইউক্রেনে অযথা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে চান না, এমনই তার অবস্থান। ইউক্রেনের সামনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন,পশ্চিমারা কি আসলেই ইউক্রেনকে ছেড়ে দিচ্ছে?মার্কিন সমর্থন কি আর আগের মতো নেই? যদি আমেরিকা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কী?
ইউক্রেনের বর্তমান অবস্থা, আমেরিকার নীতিগত দোদুল্যমানতা এবং ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান মিলিয়ে, খামিনীর বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার বেশ মিল দেখা যাচ্ছে। এক কথায়, জেলেনস্কির জন্য সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হতে চলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :