সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দুজনের মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতণ্ডা হয়। তাদের সেই বৈঠকটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে; যেখানে দেখা যাচ্ছে, দুই নেতা প্রকাশ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তবে ঘটনাটি বাস্তবে ঘটেনি। এআই প্রযুক্তি দিয়ে ভিডিও বানানো হয়েছে। ভিডিওটি অনেকেই মজা করে শেয়ার করছেন।
এর আগে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মূল্যবান খনিজসম্পদ নিয়ে চুক্তি এবং রুশ হামলা ঠেকাতে মার্কিন নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি আদায়ের জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি। তবে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর কোনো চুক্তি ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়।
রাশিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি ডলারের অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা পায় ইউক্রেন। এবারের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। সেই কারণে সবার নজর ছিল শুক্রবারের ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে চলা বৈঠকে জেলেনস্কিকে একের পর আক্রমণ করে বক্তব্য দিতে দেখা যায় ট্রাম্পকে। জেলেনস্কি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, আপনার দেশের মানুষ খুবই সাহসী। কিন্ত আপনাকে হয় (রাশিয়ার সঙ্গে) একটি চুক্তি করতে হবে না হলে আমরা আর আপনাদের সাথে নেই। আর আমরা যদি না থাকি তাহলে আপনাকে একাই লড়তে হবে।
হঠাৎ চিৎকার-উত্তেজনার পর্যায়ে চলে যায় বৈঠকটি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, মানুষ মারা পড়ছে। যুদ্ধের জন্য সেনা সদস্যের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। আপনার (জেলেনস্কি) হাতে বিকল্প নেই। একবার আমরা চুক্তি সই করলে আপনি ভালো অবস্থানে চলে যাবেন। কিন্ত আপনাকে আদৌ কৃতজ্ঞ মনে হচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কি এটা ভালো কোনো বিষয় নয়।
যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করতে চাইলে ইউক্রেনকে ছাড় দিতে হবে। তিনি বলেন, ছাড় দেওয়া ছাড়া আপনি কোনো চুক্তি করতে পারবেন না। তাই এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তাকে (জেলেনস্কি) কিছু ছাড় দিতে হবে। আশা করি, বড় কোনো ছাড় দিতে হবে না যেমনটা লোকে বলে বেড়াচ্ছে।
জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামোল্লেখ করে বলেন, একজন খুনিকে কোনো ছাড় দেওয়া উচিত না, পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থানের সমালোচনা করেন জেলেনস্কি।
এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও। ওভাল অফিসে বসে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জেলেনস্কি অসম্মান করেছেন মন্তব্য করে ভ্যান্স বলেন, আপনি একবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না। মাথা নেড়ে ভ্যান্সের কথায় সায় দেন ট্রাম্প।
তখন গলার স্বর উঁচু করে জেলেনস্কি বলেন, বহুবার বলেছি, আমেরিকার জনগণকে ধন্যবাদ।
এই উত্তপ্ত বৈঠকের পর ইউরোপের অনেক নেতাই কিইভের পক্ষে তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।