মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক মঙ্গলবার (৪ মার্চ) থেকে কার্যকর হবে। একই দিনে চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপেরও হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, মেক্সিকো, কানাডা এবং চীন থেকে এখনও যুক্তরাষ্ট্রে বিপজ্জনক মাদক ও অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে, যা বন্ধ করতেই এই শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুল্কারোপের পেছনের কারণ
ট্রাম্প তার পোস্টে উল্লেখ করেন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক প্রবেশ করছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে ফেন্টানিলের মতো মারাত্মক মাদকের প্রবাহ রোধ করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হচ্ছে
গত মাসেই মেক্সিকো ও কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ছিল, তবে তখন দেশ দুটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখেন। তবে এবার আর পিছু হটছেন না তিনি।
চীনের আমদানি পণ্যে ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। নতুন করে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে চীনা পণ্যে মোট শুল্ক দাঁড়াবে ২০ শতাংশ।
মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব
মেক্সিকো, কানাডা ও চীন- এই তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। একসঙ্গে তিন দেশের ওপর শুল্কারোপের ফলে মার্কিন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলেই ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এরই মধ্যে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এছারা, ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ০.৪৫% কমে গেছে, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১.৫৯% হ্রাস পেয়েছে এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচকের দরপতন হয়েছে ২.৭৮%।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিন দেশেই সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়েছে। মেক্সিকো, কানাডা ও চীন পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের চিন্তা করছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফেন্টানিল ইস্যুকে যুক্তরাষ্ট্র অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি আরও দাবি করেন, এই শুল্কারোপ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (WTO) নিয়ম লঙ্ঘন করছে এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করছে।
এদিকে, কানাডা ইতোমধ্যেই সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করেছে। দেশটির বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি জানিয়েছে, ফেন্টানিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে, তাহলে কানাডাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলে সতর্ক করেছে।