চুক্তি নবায়ন ছাড়াই গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে এ উপত্যকায় যেকোনো সময় সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে ইসরায়েল, এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ইসরায়েল বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রমজানজুড়ে যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে রাজি তেল আবিব। সেক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, মুক্তি দিতে হবে বন্দিদের। অন্যদিকে হামাস বন্ধ ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন ও নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা ফিরেছে স্বাভাবিক নিয়মে। এর মধ্যেই এসেছে পবিত্র রমজান। কিছুটা হলেও উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই তারাবির নামাজ আদায়ের পাশাপাশি ইফতারসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় কেনাকাটায় ব্যস্ত বাসিন্দারা।
তবে রমজান শুরু হতেই ফের ইসরায়েলি বর্বরতার আশঙ্কায় আতঙ্কিত উপত্যকাটির সাধারণ মানুষ। কারণ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ বন্ধের পর ইসরায়েল এবার রিজার্ভ সেনাদের ডাকার কথা ভাবছে। গতকাল সোমবার দেশটির গণমাধ্যমের বরাতে এমন তথ্য জানিয়ে আল-জাজিরা বলছে, ২০২৫ সাল থেকে পারে যুদ্ধের বছর। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে ইসরায়েলকে। যার মধ্যে রয়েছে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা। সাবেক বাইডেন প্রশাসন এ বোমার চালান আটকে রেখেছিল।
দ্রæতগতিতে এত মার্কিন অস্ত্রের চালান ও ট্রাম্পের সমর্থন পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ১৫ মাসের যুদ্ধে গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। হাজার হাজার যোদ্ধা হারিয়ে হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো ইসরায়েলবিরোধী সংগঠনগুলো অনেকাংশে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন পরস্থিতিতে বিপুলসংখ্যক রিজার্ভ সেনা তলবের পরিকল্পনার পেছনে কারণ কী? ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মধ্যেপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ দেখা দিতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এ ব্যবস্থা নিতে পারে।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের জোর করে গাজা থেকে মিসরে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে সে ক্ষেত্রে মিসরের সঙ্গেও যুদ্ধ বেধে যেতে পারে ইসরায়েলের। এ ছাড়া সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর গোলান মালভ‚মি ও দেশটির দ্রæজ সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের সমর্থন দেওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেখা দিয়েছে। তাই এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, ক্ষমতায় টিকে থাকতে নেতানিয়াহু আবার যুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছেন। এদিকে গাজায় হামাসের হাতে থাকা বাকি ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করতে দেশটির নাগরিকরা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি মন্ত্রীদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বিরোধী দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্বার্থে ইসরায়েলি বন্দিদের জীবন হুমকিতে ফেলছেন। ইসরায়েলি ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান বলেছেন, কত সৈন্য মারা গেছে বা জিম্মিদের জীবন নিয়ে নেতানিয়াহুর কোনো মাথাব্যথা নেই।