পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তোরখাম সীমান্তে সংঘর্ষ হয়েছে, যেখানে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। সোমবার দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রমজান শুরুর দিনেই সংঘর্ষ
পবিত্র রমজান মাসের প্রথম কার্যদিবসে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাধারণত, রমজানে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পায়, কারণ দেশটি বর্তমানে মানবিক ও খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে।
তবে গত ১০ দিন ধরে তোরখাম সীমান্ত বন্ধ থাকায় হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক সেখানে আটকা পড়েছে, যা দুই দেশের বাণিজ্যে বড় প্রভাব ফেলছে।
রাতভর গোলাগুলির ঘটনা
আফগান তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্ত সংঘর্ষে তাদের একজন যোদ্ধা নিহত ও দু’জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে তাদের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উত্তেজনা
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে, আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। তবে তালেবান প্রশাসন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ডিসেম্বরেও আফগানিস্তানে জঙ্গি আস্তানায় পাকিস্তান বিমান হামলা চালায়, যেখানে অন্তত কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়।
সীমান্ত বন্ধ, ক্ষতির মুখে ব্যবসা
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল মতিন কানিয়ে জানিয়েছেন, সীমান্ত সংঘর্ষের সমাধান হয়েছে। তবে তোরখাম ক্রসিং পুনরায় চালু হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
এদিকে, পাকিস্তান-আফগানিস্তান জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক জিয়াউল হক সারহাদি বলেন, “এই সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর, এটি দুই দেশের বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।”
উভয় দেশের চেম্বার অব কমার্সের কর্মকর্তারা জানান, সীমান্তে নতুন ফাঁড়ি নির্মাণ নিয়ে বিরোধের জেরে ক্রসিংটি বন্ধ রয়েছে, যার ফলে ৫,০০০-এর বেশি মালবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। ব্যবসায়ীরা ক্রমবর্ধমান লোকসানে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
প্রশ্ন উঠছে- এই সংকট দ্রুত সমাধান না হলে, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে কি না?
সূত্র: রয়টার্স।
আপনার মতামত লিখুন :