ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ, ২০২৫

সামরিক বিমানে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো স্থগিত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত

অতিরিক্ত খরচের কারণে সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।


 

অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে সর্বশেষ ১ মার্চ সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজ ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পেন্টাগনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে আর কোনো শিডিউল বা পূর্ব নির্ধারিত ফ্লাইট নেই। তারা আরও জানান, সামরিক বিমানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠানো আপাতত স্থগিত করা হয়েছে এবং এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ওয়াশিংটন। 

গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এসব আদেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নথিবিহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ট্রাম্প এই আদেশে স্বাক্ষরের পর থেকে নথিবিহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অভিযান শুরু হয় । বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রেপ্তার করে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ারই একটি অংশ ছিল মার্কিন সামরিক বাহিনীর সি-১৭ এবং সি-১৩০ উড়োজাহাজ। এ দুই ধরনের সামরিক বিমানে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। 

পেন্টাগনের তথ্য অনুসারে, গত ২০ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩০টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে ভারত, গুয়েতেমালা, ইকুয়েডর, পেরু, হন্ডুরাস, পানামা ও গুয়ান্তানামোসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। এসব ফ্লাইটে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে। বিশেষ করে, পেন্টাগন একাধিকবার ভারতে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, যেখানে প্রতি ফ্লাইটে খরচ হয়েছে ৩০ লাখ ডলার। এক হিসাব অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া নথিবিহীন অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে মাথাপিছু খরচ প্রায় ২০ হাজার ডলার।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর পরিবহন বিভাগ, ইউএস ট্রান্সপোর্টেশন কমান্ডের তথ্য অনুসারে, সি-১৭ উড়োজাহাজটি ভারী সামরিক সরঞ্জাম এবং সেনাসদস্যদের স্থানান্তরের জন্য উপযোগী করা হয়েছে। এটি প্রতি ঘণ্টায় ২৮,৫০০ ডলার ব্যয় করে। অন্যদিকে, অভিবাসন বিষয়ক মার্কিন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর উড়োজাহাজগুলো প্রতি ঘণ্টায় ৮,৫০০ ডলার খরচ করে।

এ ছাড়া আরও কিছু সমস্যা রয়েছে।  কয়েক বছর আগে মেক্সিকোর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল, যার ফলে মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজ বা হেলিকপ্টার মেক্সিকোর আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারে না। এই কারণে অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে সি-১৭ এবং সি-১৩০ বিমানের মাধ্যমে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার আকাশসীমা ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা ফ্লাইটের সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি করছে।

এ ছাড়া, লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তাদের বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজকে আর অবতরণের অনুমতি দেওয়া হবে না। এসব কারণের পরিপ্রেক্ষিতে, সামরিক বিমানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন।