সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান, ৭৪৫ জন আলাউইত নিহত

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ১১:২০ এএম

সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান, ৭৪৫ জন আলাউইত নিহত

ছবিঃ সংগৃহীত

সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানে গত তিনদিনে ৭৪৫ জন আলাউইত সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হয়েছেন, যা দেশটিতে নতুন করে সংঘাতের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটির যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বলছে, এ সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে।  

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর পক্ষ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে ১২৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং বাশার আল-আসাদের অনুগত ১৪৮ জন যোদ্ধাও প্রাণ হারিয়েছেন।  

সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আলাউইত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সম্প্রদায় আসাদকে সমর্থন করত, তাই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর টার্গেটে পরিণত হয়েছে। লাতাকিয়া, তারতুস ও হোমসের গ্রামীণ অঞ্চলে আলাউইতদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দমন অভিযান চলছে।

নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা পরিস্থিতি সামলাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। আলাউইত বিদ্রোহীদের অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আলাউইতদের সতর্কবার্তা: ‘অস্ত্র সমর্পণ করুন, না হলে ফল ভুগতে হবে’

সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি সরকারি টেলিভিশনে এক সতর্কবার্তা দেন, যেখানে তিনি বলেন, “হাজার হাজার মানুষ অস্ত্র সমর্পণ করে পরিবারের কাছে ফিরে গেছে, কিন্তু যারা এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের জন্য অনিবার্য পরিণতি অপেক্ষা করছে।”

আলাউইত বিদ্রোহীদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেন: “আপনারা সিরিয়ার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছেন এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। আত্মসমর্পণ করুন, দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই অস্ত্র ফেলে দিন।”

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিরীয় সরকার লাতাকিয়া, তারতুস এবং হোমস শহরে কারফিউ জারি করেছে। এই অঞ্চলগুলোকেই আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ধরা হয়।

সরকারি বাহিনী আসাদের অনুগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে। একইসঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আসাদের অনুগত আলাউইতদের নিধন এবং প্রতিরোধের ফলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ আরও জটিল হতে পারে। যদি বিদ্রোহীরা সরকারকে অমান্য করে, তাহলে আরও বড় সামরিক অভিযান আসতে পারে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।  

সিরিয়ার এই নতুন সংঘাত কি আরও ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে? নাকি সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে? সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সূত্রঃ এএফপি
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!