ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলেও কিয়েভ এখন শান্তি আলোচনার পথ বেছে নিচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে ‘সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
সোমবার (১০ মার্চ) জানা যায়, রাশিয়া নতুন করে সুমি ও কুরস্ক অঞ্চলে সাফল্য অর্জনের দাবি করেছে। অন্যদিকে, জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে সৌদি আরবে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার আগে তিনি মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবার লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহর জেদ্দায় ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এ আলোচনায় যুদ্ধবিরতি ও সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির কাঠামো তৈরিতে কাজ করছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তাদের বাহিনী ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলের নোভেন গ্রাম ‘মুক্ত’ করেছে এবং কুরস্কের আরও কয়েকটি গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে। তবে কিয়েভ এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ রাশিয়াকে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান সরবরাহ পথ অবরুদ্ধ করার সুযোগ দিতে পারে।
রোববার এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি আমাদের সব ইউনিটকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা দখলদারদের প্রতিহত করছে এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রন্টলাইনে শক্তিশালী অবস্থান থাকলেই কূটনীতিতে আমাদের অবস্থান দৃঢ় হবে। তাই আমরা আমাদের সেনাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তপ্ত বিতর্কের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে সামরিক ও গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি সীমিত করেছে এবং সামরিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, কিয়েভকে আলোচনার টেবিলে আনতে ওয়াশিংটন এই কৌশল নিয়েছে।
এদিকে, ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনকে সমর্থন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
জেলেনস্কি শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি শিগগিরই সৌদি আরব সফর করবেন। সোমবার তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, এরপর মঙ্গলবার ইউক্রেনের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ‘যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেন শান্তির পথ অনুসরণ করছে। আলোচনার জন্য বাস্তবসম্মত প্রস্তাব টেবিলে রয়েছে। দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগোনোটাই এখন মূল চাবিকাঠি।’
সূত্র: আল জাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :