স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের নীতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও দেশটির স্টারলিংক পরিষেবা বন্ধ করবেন না। কারণ এটি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রধান যোগাযোগব্যবস্থা হিসেবে কাজ করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোসল সিকোর্সকির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে মাস্ক এই মন্তব্য করেন।
রোববার (১০ মার্চ) পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিকোর্সকি বলেন, ‘পোল্যান্ড যদি ইউক্রেনের স্টারলিংকের খরচ বহন করতে না পারে, তবে বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা খুঁজতে হবে।’
এর জবাবে মাস্ক এক্স-এ মন্তব্য করেন, ‘আমি সরাসরি পুতিনকে ইউক্রেন ইস্যুতে দ্বৈত লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি। আমার স্টারলিংক ব্যবস্থা ইউক্রেনীয় বাহিনীর মেরুদণ্ড। আমি যদি এটি বন্ধ করে দিই, তাহলে তাদের পুরো ফ্রন্টলাইন ভেঙে পড়বে।’
মাস্ক আরও বলেন, ‘আমি হতাশ যে এই যুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে চলছে এবং এটি একটি স্থবির অবস্থায় চলে গেছে। ইউক্রেন অবশেষে হারবে।’
মার্কো রুবিও মাস্কের মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘কেউ ইউক্রেন থেকে স্টারলিংক বন্ধ করার হুমকি দেয়নি। আসলে স্টারলিংক ছাড়া ইউক্রেন অনেক আগেই যুদ্ধ হারিয়ে ফেলত এবং রাশিয়া এখন পোল্যান্ডের সীমান্তে থাকত।’
এদিকে, পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনায় মাস্ক আরও বলেন, ‘শান্ত থাকুন, ছোট মানুষ। আপনি সামান্য অর্থ ব্যয় করছেন এবং স্টারলিংকের কোনো বিকল্প নেই।’
স্টারলিংক বন্ধের গুজব উড়িয়ে দিলেন মাস্ক
এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য স্টারলিংক সংযোগ বন্ধের হুমকি দিতে পারে।
তবে রবিবার মাস্ক এই গুঞ্জন নাকচ করে বলেন, ‘আমি ইউক্রেন নীতির সঙ্গে যতই দ্বিমত পোষণ করি না কেন, স্টারলিংক কখনো বন্ধ হবে না। রাশিয়ান বাহিনী অন্য সব যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত করতে পারলেও স্টারলিংক ব্যাহত করতে পারে না। আমরা কখনো এটি বন্ধ করব না বা এটিকে কোনো চুক্তির অংশ বানাব না। ’
বর্তমানে ইউক্রেনে প্রায় ৪২,০০০ স্টারলিংক টার্মিনাল সক্রিয় রয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকের অর্থায়ন করেছে পোল্যান্ড। এই টার্মিনালগুলো ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী, জরুরি পরিষেবা ও বেসামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে, রুশ বাহিনীর সাইবার হামলা ও ব্লকিং প্রযুক্তির বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে স্টারলিংক।
বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের স্টারলিংক সেবা বন্ধ হয়ে গেলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তাই এই প্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক চললেও ইউক্রেনের জন্য এটি চালু রাখার বিষয়টি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন :