কুরস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পতন

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৫, ০৯:৩৬ এএম

কুরস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পতন

ছবিঃ সংগৃহীত

রাশিয়ার শক্তিশালী আক্রমণের মুখে কুরস্ক অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ক্রমাগত হামলার ফলে ইউক্রেনীয় সেনারা পিছু হটছে, এবং রাশিয়া দাবি, তারা ইতোমধ্যে সাতটি গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।  

গত আগস্টে ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হঠাৎ আক্রমণ চালিয়ে ১,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছিল, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শহর সুদজাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অভিযানকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূখণ্ডে সবচেয়ে বড় হামলা বলে ধরা হয়েছে।  

কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে রুশ সেনাদের পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা লাইন ভেঙে পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরীয় সেনারাও রাশিয়ান বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে এবং তারা ফ্রন্টলাইনে রুশ সেনাদের শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে সহায়তা করছে।  

সুদজায় গোপন রুশ অভিযান: গ্যাস পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হওয়া

রুশ সেনারা সুদজা শহরে ঢোকার জন্য অভিনব একটি কৌশল গ্রহণ করেছে। তারা একটি বিশাল গ্যাস পাইপলাইন ধরে হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর রসদ সরবরাহের পথ কেটে দেয়।  

এই বিষয়ে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীও নিশ্চিত করে জানিয়েছে, রাশিয়ার বিশেষ বাহিনী একটি ভূগর্ভস্থ গ্যাস পাইপ ব্যবহার করে সুদজার উপকণ্ঠে প্রবেশ করেছে। তবে কিয়েভের দাবি, তারা রুশ সেনাদের শনাক্ত করে আটকাতে সক্ষম হয়েছে।  

ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘেরাওয়ের শঙ্কা

ওপেন-সোর্স মানচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, কুরস্ক অঞ্চলে কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা ঘেরাও হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অভিজ্ঞ ও উচ্চ প্রশিক্ষিত সেনার সংখ্যাই বেশি, যা ইউক্রেনের জন্য বিরাট ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

রাশিয়ার সামরিক বিজয় ও মার্কিন অবস্থান

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুদজার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে চারটি গ্রাম দখল করা হয়েছে। এর আগের দিনও আরও তিনটি গ্রাম দখলের দাবি করেছিল রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনেও ধীরে কিন্তু স্থায়ীভাবে অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও শান্তি আলোচনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে চাপ দিচ্ছেন। তিনি ইতোমধ্যে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন।  

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কোনো শান্তিচুক্তিতে যেতে রাজি নন, যদি না তার দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

ফলাফল ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি

  • ইউক্রেনের কুরস্ক আক্রমণের পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে চলেছে।  
  • রুশ বাহিনী দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে, যা ইউক্রেনের জন্য একটি বড় কৌশলগত ধাক্কা।  
  • মার্কিন সহায়তা বন্ধ হওয়ায় ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।  

এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সামরিক নেতৃত্বের সামনে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা কি প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে, নাকি কোনো সমঝোতার পথে হাঁটবে?

সূত্র: এপি

আরবি/এসএস

Link copied!