বিশ্ববাজারে অস্ত্র তৈরি ও রপ্তানিতে আবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শতাধিক দেশে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ করা হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রাষ্ট্র।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) জানায়, গত চার বছরে বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র রপ্তানি ৩৫% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩%-এ। যা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফ্রান্সের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি এবং তৃতীয় থেকে নবম স্থানে থাকা দেশগুলোর সম্মিলিত অস্ত্র রপ্তানির সমান।
গত পাঁচ বছরে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে অস্ত্র সরবরাহ ৫২% থেকে বেড়ে ৬৪%-এ পৌঁছেছে। এছাড়া, এসব দেশে মার্কিন অস্ত্র আমদানি ১০৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এসআইপিআরআই (SIPRI)-এর গবেষক পিটার ওয়াইজম্যান বলেন, ইউরোপের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো এখন অস্ত্র আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। তারা নিজস্ব প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে তবুও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের অস্ত্র সরবরাহের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ।
মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে ইউরোপেই বেশি অস্ত্র রপ্তানি
গত দুই দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অস্ত্র ক্রেতা। তবে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইউরোপে মার্কিন অস্ত্র রপ্তানির হার ৩৫%-এ পৌঁছেছে, যেখানে একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে এই হার ছিল ৩৩%।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ, ন্যাটোর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকি মোকাবিলায় ইউরোপের দেশগুলো প্রচুর অস্ত্র সংগ্রহ করছে। এ কারণেই মার্কিন অস্ত্র রপ্তানির প্রধান বাজার এখন ইউরোপ।
বিশ্ববাজারে মার্কিন অস্ত্রের আধিপত্য
বিশ্ববাজারে মার্কিন অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাঁজোয়া যান, মিসাইল ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট, প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম, হিমারস রকেট লঞ্চার ও অ্যাব্রামস ট্যাংকের মতো উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র বিভিন্ন দেশ ক্রয় করছে।
বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ধরে রাখতে অস্ত্র রপ্তানি এখন কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সূত্র: সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :