ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC)-এ বিচার করা হবে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ), তাকে ম্যানিলা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দুতার্তে ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এই সময়ে তিনি মাদকবিরোধী অভিযানের নামে হাজারো ছোটখাট মাদক বিক্রেতা ও মাদকাসক্তদের বিচার ছাড়াই হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
গ্রেপ্তারের পর তাকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে দুবাই হয়ে নেদারল্যান্ডসের রটারডামে নিয়ে যাওয়া হয়। দুবাইতে কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি করা হয়, যেখানে দুতার্তের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে, আইসিসি নিশ্চিত করে যে তিনি তাদের হেফাজতে আছেন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য তার বিচার হবে।
দুতার্তের গ্রেপ্তারের খবর শুনে তার সমর্থকরা দ্য হেগে জড়ো হন। তারা ফিলিপাইনের পতাকা নেড়ে ও দুতার্তের বিখ্যাত মুষ্টিবদ্ধ ইশারা দেখিয়ে প্রতিবাদ করেন।
দুতার্তেকে আন্তর্জাতিক আদালতে হস্তান্তর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র।
দুতার্তে ও মার্কোস পরিবারের মধ্যে একসময় ভালো সম্পর্ক থাকলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের নির্বাচনে দুতার্তের কন্যা সারা দুতার্তে, প্রেসিডেন্ট পদে না দাঁড়িয়ে মার্কোসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হন, যা তার বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিল।
দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করার পরপরই প্রেসিডেন্ট মার্কোস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের কাছ থেকে এটা আশা করে, তাই আমরা আমাদের আইনগত দায়িত্ব পালন করছি।’
উপরাষ্ট্রপতি সারা দুতার্তে এই গ্রেপ্তার কে অপহরণ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে এটি ফিলিপাইনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। তিনি তার বাবার পক্ষে দ্য হেগে যাওয়ার জন্য বুধবার ম্যানিলা ত্যাগ করেছেন।
আইসিসি শীঘ্রই দুতার্তের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবে। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে দীর্ঘ কারাদণ্ড হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই বিচার ফিলিপাইনের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে।
সূত্র: বিবিসি