রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম

রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্ক করেছেন যে, যদি তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ না করেন, তাহলে রাশিয়ার ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে।  

ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করা হলে তা রাশিয়া এবং পুতিনের জন্য একটি বড় উপকার হবে।’

তিনি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট থাকলে তিনি একদিনেই যুদ্ধের সমাধান করে ফেলতেন।

কিন্তু এই হুঁশিয়ারির জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘রাশিয়া এখনো সম্মানজনক আলোচনার জন্য প্রস্তুত তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারা কোনো ইতিবাচক বার্তা পায়নি। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প আগেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন, তাই এটি নতুন কিছু নয়।’

ভ্লাদিমির পুতিন বারবার বলেছেন যে, তিনি আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি চান, তবে ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো ছেড়ে দিতে হবে। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০% ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। তাছাড়া, তিনি ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানকেও মেনে নিতে রাজি নন।  

কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল ছাড়তে রাজি নন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, কিছু এলাকা সাময়িকভাবে হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি খুব শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন এবং যদি আলোচনার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।’

পরের দিন তার পোস্টে তিনি আরও কঠোর ভাষায় বলেন, ‘রাশিয়ার অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, আমি পুতিন ও রাশিয়াকে বড় উপকার করতে চাই। যুদ্ধ বন্ধ করুন! এটি আরও খারাপ হতে চলেছে!’

তিনি আরও লেখেন যদি দ্রুত কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে আমি রাশিয়ার যেকোনো পণ্য আমদানির ওপর উচ্চ কর ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব।  

তিনি দাবি করেন, যদি তিনি প্রেসিডেন্ট থাকতেন, তাহলে এই যুদ্ধ কখনোই শুরু হতো না এবং এখন এটি দ্রুত বন্ধ করার সময় এসেছে।  

ট্রাম্পের সাবেক ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি, কার্ট ভলকার বলেন যে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি পুতিনকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে পারে। তবে তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র হুমকি নয়, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিকে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বলেন, ‘কমপক্ষে ২ লাখ শান্তিরক্ষী সেনা দরকার যেকোনো সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য।’ 
তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা না থাকলে এটি কার্যকর হবে না।’

বর্তমানে, রাশিয়ার মূল রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে ফসফেট-ভিত্তিক সার এবং প্লাটিনাম রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির একটি অংশ। কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে রাশিয়ার রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হন এবং নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেন, তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি বাস্তবে কার্যকর হয়।

সূত্র: বিবিসি

আরবি/এসএস

Link copied!