পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তানে গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা ও ছিনতাইয়ে দায় স্বীকার করেন বালোচ লিবারেশন আর্মি। আজ শনিবার বিএলএ দাবি করেছে, তারা ট্রেনের ২১৪ জন জিম্মিকে হত্যা করেছে।
এর আগে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুধবার (১২ মার্চ) রাতে জাফর এক্সপ্রেসে উদ্ধার অভিযান ‘সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে’। সকল জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে ৩৩ জন বেলুচ বিদ্রোহীকে হত্যা করা হয়েছে।
কিন্তু শনিবার বিএলএ-র বিবৃতিতে পাক সেনার সেই দাবি নাকচ করে দেয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ট্রেন ছিনতাইয়ের পর তারা পাকিস্তান সরকারকে যে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল, তা শুক্রবার (১৪ মার্চ) শেষ হয়েছে। সরকার তাদের দাবি মেনে নেয়নি। ফলে ২১৪ জন জিম্মিকে হত্যা করা হয়েছে। এই জিম্মিরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি তাদের।
বিএলএ’র দাবি ছিল, বেলুচিস্তান থেকে তাদের যে সদস্যদের গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী বন্দি করে রেখেছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। বিনিময়ে জিম্মিদেরও মুক্তি দেয়া হবে। কিন্তু পাক সরকার এ বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি। পাক সরকারকে ‘একগুঁয়ে’ অভিহিত করে বিএলএ-র মুথপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ বলেছেন, পাক বাহিনীকে আল্টিমেটাম দেয়া সত্ত্বেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। তার ফল এই ২১৪ জনের হত্যা।
বিএলএ-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বরাবরের মতো একগুঁয়েমি এবং সেনার আগ্রাসন দেখিয়েছে পাকিস্তান সরকার। আমাদের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা তারা এড়িয়ে গেছে। বাস্তবকে অস্বীকার করেছে। এই একগুঁয়েমির ফলে ২১৪ জন পণবন্দিকে হত্যা করা হল।’ বিএলএ-র দাবি প্রসঙ্গে এখনও পাক সরকারের বক্তব্য জানা যায়নি।
কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের পথে বেলচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাই করে বিদ্রোহীরা। ট্রেনটিতে ৪০০ এর বেশি যাত্রী ছিলেন। বুধবার রাতে পাক সেনাবাহিনী জানায়, তাদের অভিযান শেষ। সকল বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের হাতে ২৮ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক সেনাবাহিনীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিএলএ। তাদের বক্তব্য, জাফর এক্সপ্রেস অভিযানে পাক সেনারা চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে তাই তারা বাস্তবতাকে অস্বীকার করছে এবং ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। তবে বিএলএ জানিয়েছে, পাক সেনার গুলিতে ১২ জন বেলুচ বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাইয়ের ঘটনার নেপথ্যে ভারত ও আফগানিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। তবে তালেবান সরকার দাবি করেছে, এই ঘটনায় তাদের যোগ নেই। তারা নিজেদের দেশের সমস্যা সমাধানে বেশি আগ্রহী। ভারতও ট্রেনে হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করেছে ।
তথ্যসূত্র: এএনআই ও হিন্দুস্তান টাইমস
আপনার মতামত লিখুন :