গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) পৃথিবীর কিছু অংশ থেকে যখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাচ্ছিল, তখন চাঁদে থাকা একটি মহাকাশযান বিভিন্ন দিক থেকে সূর্যগ্রহণের দৃশ্য ধারণ করে। যানটির নাম ‘ব্লু ঘোস্ট ল্যান্ডার’। মহাকাশযানের তোলা ছবিতে সূর্যগ্রহণকে একটি ফায়ার রিং হিসেবে দেখা গেছে।
টেক্সাস-ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস জানিয়েছে, তারা গত ২ মার্চ চাঁদে সফলভাবে ‘ব্লু ঘোস্ট ল্যান্ডার’ নামে একটি চন্দ্রযান পাঠায়। এই চন্দ্রযানটি দিয়ে পৃথিবীর সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদের সারিবদ্ধ ছবি ধারণ করা হয়।
মহাকাশযানটি এক্স-ব্যান্ড অ্যান্টেনা ব্যবহার করে ডেটা ও ছবিগুলো পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। সূর্যগ্রহণের সময় সৃষ্ট অন্ধকারে চন্দ্রপৃষ্ঠে ঠাণ্ড তাপমাত্রা নেমে আসে। এরপর ধীরে ধীরে গ্রহণ কেটে যাওয়ার পর আবারও উষ্ণ অবস্থার সৃষ্টি হলে ছবিগুলো পৃথিবীতে আসতে থাকে।
ল্যান্ডারটি ‘ডায়মন্ড রিং’ হিসেবে পরিচিত একটি দৃশ্য ধারণ করেছে। এটি মূলত পৃথিবী সূর্যকে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করার আগে সূর্যের আলো উঁকি দেওয়ার বিষয়টিকে বোঝায়। সূর্যগ্রহণের সময় ল্যান্ডারটির দ্রুত ধারণ করা বেশ কিছু ছবি একসাথে করে তৈরি ফুটেজও শেয়ার করেছে ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস। এতে দেখা যাচ্ছে, সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সাথে সাথে মহাকাশযানটি গভীর লাল রঙ ধারণ করছে, যার ফলে চন্দ্র পৃষ্ঠের উপর একটি ছায়া পড়েছে।
এ বিষয়ে চন্দ্রযানটির প্রধান প্রকৌশলী উইল কুগান ই-মেইল বার্তায় বলেছেন, ‘কোনো বাণিজ্যিক সংস্থার চাঁদে গিয়ে সূর্যগ্রহণের চিত্র ধারণ করার মতো এমন বিরল ঘটনা ইতিহাসে প্রথম। এখন পর্যন্ত যে চিত্রগুলো পেয়েছি তাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’
কুগান জানান, ‘পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় প্রায় ৫ ঘণ্টা অন্ধকারে কাজ করেছে ব্লু ঘোস্ট। এ সময় চাঁদে তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে। ফলে চন্দ্রযানটির জন্য সূর্যালোক ছাড়া কাজ করা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। আলোক শক্তি না থাকার কারণে ল্যান্ডারটি শুধু ব্যাটারি শক্তিতে চলছিল।’
এর আগে একটি মহাকাশযান চাঁদের পৃষ্ঠে থাকাকালীন কেবল একবারই সূর্যগ্রহণ ধারণ করেছে। ১৯৬৭ সালে অ্যাপোলো মিশনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রেরিত নাসার সার্ভেয়ার ৩ ল্যান্ডার, অন্য একটি মহাকাশীয় যন্ত্রের সহায়তায় প্রথম দৃশ্যের একাধিক ছবি ধারণ করেছিল।
সূত্রঃ সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :