ফরাসি রাজনীতিবিদ রাফায়েল গ্লুকসম্যান যুক্তরাষ্ট্রকে স্ট্যাচু অব লিবার্টি (Statue of Liberty) ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি তোমাদের উপহার হিসেবে দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা এটি আর সম্মান করো না। তাই এটি আমাদের কাছেই ভালো থাকবে।’
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে মন্ডে (Le Monde)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের রাজনৈতিক দল প্লেস পাব্লিক (Place Publique)-এর এক সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে গ্লুকসম্যান এ দাবি তোলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, ‘যারা বিজ্ঞান ও গবেষণার স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলায় গবেষকদের চাকরিচ্যুত করছে, যারা স্বৈরশাসকদের পক্ষ নিচ্ছে- তাদের আমরা বলছি, স্ট্যাচু অব লিবার্টি আমাদের ফেরত দাও।’
গ্লুকসম্যান দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেনের সমর্থক এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া ও ইউক্রেন নীতির সমালোচক।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তোমরা তোমাদের সেরা গবেষকদের বরখাস্ত করতে চাও, যদি স্বাধীনতা, নতুন উদ্ভাবন, এবং গবেষণার প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষদের ত্যাগ করতে চাও, তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো।’
কে এই রাফায়েল গ্লুকসম্যান?
রাফায়েল গ্লুকসম্যান জন্ম ১৯৭৯ সালে এবং প্যারিসের ইন্সটিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ‘প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অব সোশ্যালিস্টস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস’ দলের সদস্য। তিনি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপকমিটির সহ-সভাপতি এবং বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পর্কিত বিশেষ কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
স্ট্যাচু অব লিবার্টি যুক্তরাষ্ট্রে কিভাবে এলো?
ফ্রান্স ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মৈত্রী ও গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে স্ট্যাচু অব লিবার্টি উপহার দেয়। এটি ফরাসি ভাস্কর ফ্রেডরিক অগাস্ট বার্থোল্ডি ডিজাইন করেন এবং গুস্তাভ আইফেল (আইফেল টাওয়ারের নির্মাতা) এর কাঠামো তৈরি করেন।
১৮৮৫ সালে এটি ফরাসি নৌবাহিনীর ‘ইজেরে’ জাহাজে করে নিউইয়র্কে পাঠানো হয়। ১৮৮৬ সালে এটি সম্পূর্ণভাবে স্থাপন করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
স্ট্যাচু অব লিবার্টির তাৎপর্য
ন্যাশনাল এন্ডাওমেন্ট ফর দ্য হিউম্যানিটিস অনুযায়ী, স্ট্যাচু অব লিবার্টি স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আশার প্রতীক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শকে প্রকাশ করে এবং অভিবাসীদের জন্য একটি স্বাগতসূচক আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে।
গ্লুকসম্যানের এই বক্তব্য বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যদিও এটি প্রতীকী ও রাজনৈতিক বক্তব্য, তবে এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।