ওয়াশিংটনের এক গোপন সামরিক ঘাঁটিতে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কিছু অস্ত্র লুকিয়ে রাখা আছে। এগুলো এমন অস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বিক্রি করে না, এমনকি তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্রদেরও নয়। কারণ, এগুলো শুধু শক্তিশালী নয়, বরং বিশ্বের ভারসাম্য বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
এক সন্ধ্যায়, পেন্টাগনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে একটি গোপন বার্তা আসে। বার্তাটি আসে মধ্যপ্রাচ্যের এক ধনী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। তিনি দাবি করেন, বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্রের তালিকা তার হাতে আছে, এবং তিনি যেকোনো মূল্যে সেগুলো কিনতে চান।
সন্দেহজনকভাবে, তার দেওয়া তালিকার অস্ত্রগুলোর নাম হুবহু মিলে যায় সেই অস্ত্রগুলোর সঙ্গে, যা যুক্তরাষ্ট্র কখনোই রপ্তানি করে না—B-2 স্টেলথ বোম্বার, F-22 র্যাপ্টর, RQ-170 ড্রোন, লেজার অস্ত্র এবং আরও কিছু অজানা প্রযুক্তি।
B-2 স্টেলথ বোম্বার
• বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং উন্নত স্টেলথ বোম্বার।
• শত্রুর রাডার সিস্টেম এড়াতে সক্ষম, তাই শত্রুর প্রতিরক্ষা ভেদ করে ভেতরে ঢুকে আক্রমণ করতে পারে।
• পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম।
• ১৯৮৯ সালে প্রথম উড্ডয়ন করে এবং ১৯৯৭ সালে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়।
• বর্তমানে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২০টি B-2 বোম্বার রয়েছে।
• মূল্য: প্রতি ইউনিটের দাম ২ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা)।

F-22 র্যাপ্টর
• বিশ্বের প্রথম পঞ্চম-প্রজন্মের ফাইটার জেট, যা উচ্চ গতি, স্টেলথ প্রযুক্তি এবং সুপারক্রুজ ক্ষমতা একসঙ্গে নিয়ে এসেছে।
• শত্রুর বিমানকে ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং আধুনিক রাডার জ্যামিং সিস্টেম রয়েছে।
• অত্যন্ত দ্রুতগতির এবং হালকা ওজনের হওয়ায় যেকোনো সময় আকাশযুদ্ধে প্রতিপক্ষের থেকে এগিয়ে থাকে।
• ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়।
• যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এবং অন্য কোনো দেশকে এটি বিক্রি করেনি।
• মূল্য: প্রতি ইউনিটের দাম ১৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬৫০ কোটি টাকা)।

RQ-170 সেন্টিনেল ড্রোন
• স্টেলথ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্পাই ড্রোন, যা শত্রুর রাডারে ধরা পড়ে না।
• যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ এবং বিমান বাহিনী এটি ব্যবহার করে গোপন নজরদারির জন্য।
• ২০১১ সালে ইরানের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির সময় এই ড্রোনের একটি সংস্করণ ইরান ধরে ফেলে, যা আন্তর্জাতিক আলোচনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
• এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কাজ করতে পারে এবং শত্রুপক্ষকে অজান্তেই নজরদারি চালাতে পারে।
• মূল্য: গোপনীয়, তবে ধারণা করা হয় ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি (প্রায় ১১০০ কোটি টাকা)।

লেজার অস্ত্র (Laser Weapons)
• যুক্তরাষ্ট্র সামরিক খাতে উন্নত লেজার অস্ত্র তৈরি করেছে, যা শত্রুর ড্রোন, মিসাইল, এবং বিমানকে মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করতে পারে।
• AN/SEQ-3 LaWS নামের লেজার সিস্টেম ইতোমধ্যে মার্কিন নৌবাহিনীতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
• উচ্চ-শক্তির লেজার রশ্মি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ফোকাস করে তা ধ্বংস করতে পারে, যা প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে অনেক দ্রুত ও সস্তা।
• যুক্তরাষ্ট্র এই প্রযুক্তিকে সম্পূর্ণ গোপন রাখে এবং কোনো মিত্র দেশকেও দেয়নি।
• মূল্য: প্রতিটি শট ছোড়ার খরচ মাত্র ১ ডলার! তবে সম্পূর্ণ সিস্টেমের মূল্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি (প্রায় ১১০০ কোটি টাকা)।

এই অস্ত্রগুলো কেন এত গোপনীয়?
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এই অস্ত্রগুলোর প্রযুক্তি যদি অন্য দেশের হাতে চলে যায়, তাহলে তারা বিপজ্জনকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে স্টেলথ প্রযুক্তি ও লেজার অস্ত্র আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রের ভবিষ্যত বদলে দিতে পারে। তাই, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কিছু অস্ত্র শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
চুরি নাকি বিশ্বাসঘাতকতা?
পেন্টাগনের গোয়েন্দারা অবাক হয়ে যান—কিভাবে এই ব্যবসায়ী জানল যে অস্ত্রগুলো কোথায় আছে? কেউ কি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গোপনীয়তা ফাঁস করছে?
একটি তদন্ত দল দ্রুত তৈরি করা হয়। তারা জানতে পারে, এক প্রাক্তন সামরিক বিজ্ঞানী, ড. রবার্ট হ্যাওয়ার্ড, কয়েক মাস আগে নিখোঁজ হয়েছেন। তার বিশেষত্ব ছিল `হাইপারসনিক মিসাইল` তৈরি করা, যা শত্রুর রাডার ফাঁকি দিতে পারে এবং শব্দের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে।
গোপন তথ্য অনুসরণ করে, গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ড. হ্যাওয়ার্ড আসলে জীবিত এবং তিনি গোপনে একটি অস্ত্রবিক্রয় চুক্তি করতে যাচ্ছেন। লাস ভেগাসের একটি পরিত্যক্ত হ্যাঙ্গারে তার শেষ লেনদেন হবে।
ফেডারেল এজেন্টরা দ্রুত সেখানে পৌঁছায়। কিন্তু ঠিক যখন তারা অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে, তখনই এক বিশাল বিস্ফোরণে পুরো জায়গা কেঁপে ওঠে!
ড. হ্যাওয়ার্ড ধরা পড়েন, তবে তার মুখে এক রহস্যময় হাসি। তিনি বলেন, ‘তোমরা কি সত্যিই ভাবো যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই এসব অস্ত্র আছে?’
এজেন্টরা হতবাক হয়ে যায়। তার কথার মানে কী? অন্য কোনো শক্তিও কি গোপনে একই প্রযুক্তি তৈরি করছে? যদি তাই হয়, তবে বিশ্ব সত্যিই এক নতুন বিপদের মুখোমুখি!
যুক্তরাষ্ট্র যে অস্ত্র কখনোই বিক্রি করে না, তা কি সত্যিই একমাত্র তাদের কাছেই আছে? নাকি অন্য কেউও সেই শক্তি অর্জন করতে চলেছে?