যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ২৩৮ ভেনেজুয়েলান গ্যাং সদস্যকে এল সালভাদরের একটি কারাগারে নির্বাসিত করা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ একজন ফেডারেল বিচারক ইতোমধ্যেই এই নির্বাসন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ২০০-রও বেশি ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যকে এল সালভাদরের একটি সুপারম্যাক্স কারাগারে পাঠিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে নিশ্চিত করেছেন, এই গ্যাং সদস্যদের ট্রেন ডি আরাগুয়া নামে পরিচিত এক ভয়ঙ্কর অপরাধী সংগঠনের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তাদের সাথে এমএস-১৩ (MS-13) গ্যাংয়ের আরও ২৩ জন সদস্যকেও নির্বাসিত করা হয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বিতর্কিত হয়েছে মূলত আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করার কারণে। ফেডারেল বিচারক জেমস বোসবার্গ শনিবার (১৫ মার্চ) এই নির্বাসন ১৪ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতোমধ্যেই গ্যাং সদস্যদের বহনকারী বিমান রওনা হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দাবি- আদালতের আদেশ কার্যকর করার আগেই অভিযুক্তদের যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তাই তারা কোনো আইন লঙ্ঘন করেনি।
বুকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আদালতের রায়ের বিষয়ে মজা করে লিখেছেন- "উফ... অনেক দেরি হয়ে গেছে"।
তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন যেখানে দেখা যায়, হাত-পা বাঁধা বন্দিদের লাইনে দাঁড় করিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিমান থেকে নামিয়ে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে। বিতাড়িতদের এল সালভাদরের "মেগা-জেল" (সেকোট) কারাগারে রাখা হয়েছে, যেখানে তারা এক বছর পর্যন্ত আটক থাকতে পারে, যা প্রয়োজনে নবায়নযোগ্য হবে বলে জানা যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনিয়মিত যুদ্ধ পরিচালনা করছে। তাই তিনি ১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্টের আওতায় তাদের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের পরপরই মার্কিন জেলা আদালত এই নির্বাসন স্থগিত করলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনার পরে বিচারক বোসবার্গ ফ্লাইট বাতিল করার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি। অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের দাবি, তারা আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেনি।
এছাড়া, মার্কিন বিচার বিভাগ বিচারকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
এখন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে...
- যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেছে?
- বিতাড়িতদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না?
- এল সালভাদর এই বন্দিদের সাথে কী আচরণ করবে?
এই বিতর্কের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাসন নীতি ও গ্যাং মোকাবিলার কৌশল আবারও আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :