সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনায় থাকে ভারত। দেশটিকে চরম সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সময় মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি হোলি উৎসব নিয়ে দেশটিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার অনেক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর আসে গণমাধ্যমেও।
এবার মুসলিম ব্যক্তির দাড়ি টেনে ধরে নির্যাতন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, একজন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে কয়েকজন যুবক ঘিরে রেখেছেন। তিনি তার দাড়ি ধরে টেনে মাটি থেকে তুলছেন।
বাকিরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওই বৃদ্ধ ব্যক্তিকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন। জীবনের শেষ কোটায় এসে এমন অপদস্তে হতবাক হয়েছে পড়েছেন। অসহায় চাহনি থাকলেও প্রতিবাদ করার বাকশক্তিও যেন হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনা ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা দাড়ি টেনে বৃদ্ধকে অপদস্ত করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
ভিডিওটি ভারতের ঠিক কোন এলাকার এবং কবেবার সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এমন ন্যক্কারজন ঘটনা দেশটিতে অহরহ ঘটছে।
অনেকেরই দাবি, ভারত সরকারের মদদে দেশটিতে মুসলিমবিদ্বেষ ও ঠুনকো অজুহাতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালায় উগ্রবাদীরা। কিন্তু দেশটির প্রশাসন এসব বিষয়ে আইন প্রয়োগে কোন আগ্রহ দেখায় না।
সম্প্রতি দেশটিতে হোলি উৎসব নিয়ে ভারতের উত্তরপ্রদেশের সাম্ভলে জোরপূর্বক ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় ঐহিত্যবাহী ৬০টির বেশি মসজিদ। কট্টর হিন্দুত্ববাদি মোদি সরকার শুধু এতটুকুতেই ক্ষান্ত হয়নি। গ্রেপ্তার করেছে হাজারের বেশি মুসলিম ভারতীয়কে।
বিভিন্ন রাজ্যে মসজিদে যাওয়ার পথে কিংবা রং মাখতে না চাওয়ায় কয়েকজনকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা।
দেশটির মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে।
সেই বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি এবং ঘাসে ভরা সবুজ কাপড়ে আবৃত একটি প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার (১৭ মার্চ) হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। পক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়াও দেশটিতে মুসলিম স্থাপত্য, বাড়িঘর গুড়িয়ে দেওয়ার খবর প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়।