বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি খাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের ধাক্কা এখনো কাটেনি। এই ধারাবাহিকতায় এবার বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স কোম্পানি অ্যামাজন বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি একসাথে ১৪ হাজার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি মূলত ব্যয় সংকোচন নীতির একটি অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামাজন তাদের বার্ষিক ২১০ কোটি থেকে ৩৬০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে চায় এবং সেই লক্ষ্যে কর্মী সংখ্যা কমানোর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই ছাঁটাইয়ের বড় অংশই ম্যানেজার পদে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে হবে।
বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, বাজারের প্রতিযোগিতা এবং প্রযুক্তি খাতের পরিবর্তন বড় বড় কোম্পানিগুলোকে কর্মী ছাঁটাইয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অ্যামাজনও এর ব্যতিক্রম নয়। ব্যবসায়িক খরচ কমাতে অ্যামাজন ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন একটি কাঠামো তৈরি করছে।
একদিকে ১৪ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার পরিকল্পনা থাকলেও ২০২৫ সালের মধ্যে ১৫% নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনাও রয়েছে। অ্যামাজনের দাবি, এই ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে মূলত অদক্ষ বা কম কার্যকর কর্মীদের বাদ দেওয়া হবে।
বর্তমানে অ্যামাজনে ১০৫,৭৭০ জন ম্যানেজার কর্মী রয়েছেন। এই ছাঁটাইয়ের পর সেই সংখ্যা ৯১,৯৩৬ জনে নেমে আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপটি কোম্পানির কর্মসংস্কৃতি এবং কর্মক্ষমতা বাড়ানোর কৌশলের অংশ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।
অ্যামাজন এর আগে কোভিড-১৯ মহামারির সময় ব্যাপকভাবে কর্মী নিয়োগ করেছিল। তবে মহামারি পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বদলে যায়।
বিশ্বব্যাপী অন্যান্য বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল, মাইক্রোসফট, এবং মেটা বিগত বছরে হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। অ্যামাজনের এই সিদ্ধান্ত কেবল ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্যই নয় বরং পুরো প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি সংকেতমূলক পরিবর্তন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছাঁটাই কর্মীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ বৃদ্ধি করবে এবং প্রযুক্তি খাতে চাকরির বাজার আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে।
অ্যামাজনের অভ্যন্তরীণ কাজের সংস্কৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে এবং এই ধরনের কর্মী ছাঁটাই অন্যান্য বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একই পথে হাঁটতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।