বেশকিছু বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভুয়া নথি দিয়ে কলকাতায় ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদের মধ্যে ৬৯ জনের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট নোটিশ’ জারির আবেদন করেছে কলকাতা পুলিশ।
ধারণা করা হচ্ছে, ভুয়া নথিতে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরির অভিযুক্তদের কেউ কেউ অন্য দেশে পাড়ি দিয়েছেন। তবে এদের একটি বড় অংশ এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন। মূলত এই কারণে তাদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারির জন্য ভারতীয় অভিবাসন দপ্তরে আবেদন করেছে পুলিশ।
লুকআউট নোটিশ জারি হলে অভিযুক্তরা বিশ্বের যে দেশেই থাকুন না কেন, অন্য কোনো দেশে যেতে পারবেন না। এমনকি, সেই দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলেই সঙ্গে সঙ্গে খবর চলে আসবে কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে।
লালবাজার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের শেষের দিকে কলকাতার ভবানীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, বেশ কিছু বাংলাদেশি নাগরিক ভুয়া নথি দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় জেলার গোয়েন্দা দপ্তরের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও এক বাংলাদেশি নাগরিকসহ ১০ জনকে।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মোট ১২১ জন ভুয়া নথি দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন কলকাতার আঞ্চলিক দপ্তরে। এর মধ্যে ৭৩টি পাসপোর্ট ডেলিভারি হয়েছে। সেই পাসপোর্ট নিয়ে প্রায় ২০ জন বিদেশে চলে গেছেন। তবে ৬৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকের খোঁজে লুক আউট নোটিশ জারির আবেদন করেছে কলকাতা পুলিশ।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল জানায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে আসছে। চক্রটি নথি জালিয়াতি, পুলিশ ভেরিফিকেশনসহ পাসপোর্ট তৈরির প্রতিটি পর্যায়ে টাকা আদায় করে থাকে।
এই পাসপোর্ট তৈরির ঘটনায় ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তদন্ত শুরু করেছে, কারণ এটি সংশ্লিষ্ট আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই চক্রে পুলিশের প্রাক্তন কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন। তারা কমপক্ষে ২৫০টি জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। পুলিশের আরও কিছু বর্তমান সদস্যও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া, পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে, এই চক্রের মাধ্যমে একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক পাসপোর্ট তৈরি করেছে। তবে, কত টাকা আদায় করা হয়েছে এবং এই লেনদেনে কে কে অংশ নিয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনাটি ভারতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে।
আপনার মতামত লিখুন :