ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের ব্লেনহেইম প্রাসাদ থেকে সোনার টয়লেট চুরির অভিযোগে একজন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ১৮ ক্যারেটের শিল্পকর্মটির সোনা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করায় তার সঙ্গে অভিযুক্ত হয়েছেন আরেক ব্যক্তি। টয়লেটটি প্রায় ৫০ লাখ পাউন্ড (৬০ লাখ ডলারের বেশি) বিমা করা ছিল।
আদালতে জানানো হয়, অভিযুক্ত মাইকেল জোনস চুরির আগের দিন ব্লেনহেইম প্রাসাদে গিয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ কার্যকর ওই সোনার টয়লেট ব্যবহার করেছিলেন। তিনি সেটিকে ‘চমৎকার’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
এরপর ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে তিনি দু`জন সহযোগীসহ সেখানে ফিরে আসেন। তাদের কাছে ছিল স্লেজহ্যামার ও লোহার শাবল। একটি জানালা ভেঙে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে টয়লেটটি পাইপলাইন থেকে খুলে ফেলেন তারা। চুরির পর দ্রুত পালানোর সময় তারা প্রাসাদের ভেতর পানি জমিয়ে ক্ষতি করে যান।
প্রসিকিউটর শন সন্ডার্স বলেন, এটি ছিল এক অত্যন্ত দুঃসাহসী অভিযান, যা সুপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। তবে চোরেরা যথেষ্ট সতর্ক ছিল না। তারা ফরেনসিক প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ এবং ফোনের তথ্যের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় ফাঁস করে দেয়।`
চুরি যাওয়া টয়লেটটি আর উদ্ধার করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এটিকে ছোট ছোট সোনার টুকরোয় ভাগ করে বিক্রি করে ফেলা হয়েছে। টয়লেটটির ওজন ছিল ৯৮ কেজি এবং এটি ৬ মিলিয়ন ডলারের বিমা করা ছিল।
আদালতকে জানানো হয়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সোনার বাজারমূল্য অনুসারে টয়লেটটির সোনার দামই ছিল প্রায় ২৮ লাখ পাউন্ড (৩৬ লাখ ডলার)।
টয়লেটটি ইতালিয়ান শিল্পী মৌরিজ্জ কাতালানের ‘আমেরিকা’ শিরোনামের একটি ব্যঙ্গাত্মক শিল্পকর্মের অংশ এবং প্রদর্শনীর জন্য ব্লেনহেইম প্রাসাদে রাখা ছিল।
এর আগে এটি নিউইয়র্কের গুগেনহাইম জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভ্যান গগের একটি চিত্রকর্ম ধার চাওয়ার পর জাদুঘর তাকে এই সোনার টয়লেট ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
অক্সফোর্ড ক্রাউন কোর্টে ৩৯ বছর বয়সি মাইকেল জোনসকে চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এই চুরির পরিকল্পনাকারী ছিলেন ৪০ বছর বয়সি জেমস শিন। তিনি আগেই চুরি, ষড়যন্ত্র এবং অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, শিন ফ্রেড ডোর সঙ্গে চুরির মালামাল বিক্রির জন্য চুক্তি করার কাজ করেন। একাধিক টেক্সট বার্তায় শিন লুটের সোনাকে ‘গাড়ি’ বলে উল্লেখ করেছিলেন, তবে তিনি আসলে সোনার কথাই বলছিলেন।