ইসরায়েলের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র তেল আবিবে ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এ গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। দেশটির এ হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দেশটির এ হামলার জবাবে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গাজায় পুনরায় শুরু করা স্থল অভিযান আরও সম্প্রসারিত করা হবে। এজন্য বুধবার ওই অঞ্চলের উত্তর-দক্ষিণের প্রধান পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে শুরু করা হামলায় গাজায় দুদিনে ১৯০ জনেরও বেশি শিশুসহ ৯৭৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালের দিকের হামলায় আরও প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।
হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড বলেছে, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিশোধে তারা তেল আবিবে রকেট নিক্ষেপ করেছে। তেল আবিবে এম৯০ রকেটের একটি ব্যারেজ ছোড়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজা থেকে ছোড়া একটি প্রোজাক্টাইল আটকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য দুটি প্রোজেক্টাইল জনবসতিহীন উন্মুক্ত একটি এলাকায় আঘাত হেনেছে। তবে এই হামলায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
কয়েক সপ্তাহের অচলাবস্থার পর মঙ্গলবার ভোরের দিকে গাজা উপত্যকায় নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। পবিত্র রমজানে ইসরায়েলের নির্বিচার এই হামলার নিন্দায় সরব হয়ে উঠেছে মুসলিম বিশ্ব।
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর কিছুটা শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল গাজায়। নতুন চুক্তিতে পৌঁছানো নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে; এর মাঝেই গাজায় অতর্কিত হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা শুরু করে। জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর এটি সবচেয়ে তীব্র হামলা ছিল। এই হামলায় ৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই হামলাকে ‘কেবল শুরু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং হামাসকে তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে আরও তীব্র হামলার হুমকি দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দাবি করেছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করার দাবি করেছে। এই ঘটনায় সাইরেন বেজে ওঠে, তবে কোনো গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি বা আহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :