মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন, বিশেষ করে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের বাণিজ্য নীতি ‘অন্যায্য’, এবং এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আদায়কারী দেশগুলোর একটি। আমি মনে করি, তারা সম্ভবত এই শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমাবে। তবে ২ এপ্রিল থেকে আমরা ভারতীয় পণ্যের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করবো, যা তারা আমাদের পণ্য থেকে আদায় করে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত, যদি ভারত শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ও সম্ভাব্য শুল্ক নীতি
ট্রাম্প তার ভাষণে স্পষ্ট করেছেন যে, ভারতসহ যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করছে, তাদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক শুল্ক নীতির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ৫ মার্চ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ দশকের পর দশক ধরে আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ক ব্যবহার করেছে। এখন আমাদের পালা। ইইউ, চীন, ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো এবং কানাডা- এরা সবাই আমাদের পণ্যে অনেক বেশি শুল্ক আদায় করে। ভারত আমাদের গাড়িতে ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আদায় করে, যা খুবই অন্যায্য।
ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোর প্রসঙ্গ
ট্রাম্প ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ ইকোনমিক করিডোরকে ‘একটি চমৎকার গ্রুপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই গ্রুপের কিছু সদস্য বাণিজ্যে মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদার রয়েছে, তবে কোনো খারাপ আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের শত্রুরা আমাদের বন্ধুদের চেয়ে ভালো আচরণ করে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ভারত এখন কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা নানা মত দিচ্ছেন। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, ভারত শুল্ক নীতি কিছুটা শিথিল করতে পারে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক মসৃণ থাকে। অন্যদিকে, ভারতের নীতিনির্ধারকরা যদি শুল্ক কমাতে রাজি না হন, তবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও কূটনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্ভাব্য সংঘাত আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এখন দেখার বিষয়, ভারত ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির কী ধরনের জবাব দেয় এবং তা ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস