ফিলিস্তিনের গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির দুই মাসের মধ্যে ইসরায়েল অব্যাহতভাবে নজরদারি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ইসরায়েলি ড্রোন ও গোয়েন্দা কার্যক্রম গাজার আকাশে সক্রিয় ছিল, যা ভবিষ্যৎ হামলার প্রস্তুতির ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গত দুই মাসে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছে এবং বেসামরিক স্থাপনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করেছে। বিশেষ করে, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর ওপর নজরদারি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
একজন ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির সময়টাকে সামরিক পরিকল্পনার জন্য ব্যবহার করেছে। তাদের ড্রোন প্রায় প্রতিদিন গাজার আকাশে ঘুরেছে, যা ভবিষ্যৎ হামলার প্রস্তুতিরই ইঙ্গিত দেয়।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, গাজার নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করার জন্য কিছু নজরদারি চালানো হয়েছে, যা আত্মরক্ষার কৌশলের অংশ।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এই নজরদারি শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি ইসরায়েলের সদিচ্ছার অভাবকেই প্রকাশ করে।’
ফিলিস্তিনের প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও হামাস এই নজরদারিকে চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। হামাসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির নামে ইসরায়েল শুধু নতুন হামলার পরিকল্পনা করেছে। এটা কোনো শান্তি প্রক্রিয়া নয়, বরং একটি সামরিক কৌশল।’
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো যুদ্ধবিরতির সময় নজরদারি চালানোর বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, ‘যদি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে সামরিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে, তাহলে এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন।’
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, গাজায় ইসরায়েলের নজরদারি নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে পারে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন সংঘর্ষের শঙ্কাও বাড়ছে।
গাজায় মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে, যেখানে খাদ্য, ওষুধ এবং আশ্রয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। যদি ইসরায়েল নতুন হামলা চালায়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।