ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল তুরস্ক

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোলুকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এরপর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজপথে নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। আন্দোলনের এই পর্যায়ে শুরু হয়েছে এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি। খবর বিবিসির।

গত ১৯ মার্চ দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা একরেম ইমামোলুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার সঙ্গে ঘনিষ্ট বা যোগাযোগ আছে এমন প্রায় ১০০ জনকে আটক করা হয়। এর পরই উত্তাল হতে শুরু করে তুরস্ক। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশটির নানা প্রান্তে। এ ঘটনাকে ২০১৩ সালের পরে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন অনেকে।

ইমামোলুর বিরুদ্ধে পৌর চুক্তি সংক্রান্ত দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ঘুষ ও অর্থ পাচার ছাড়াও সন্ত্রাসবাদ সমর্থন দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ইমামোলু ৩৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন।

এবারের বিক্ষোভ দমনে ইস্তাম্বুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জমায়েতের ওপর পাঁচদিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটা সহিংসতার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অবস্থিত একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমির শহরেও বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আঙ্কারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি প্রধান সড়ক ধরে অগ্রসর হতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

দেশটির প্রশাসনের এমন বাধা ও প্রেসিডেন্টের হুমকির তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি এরদোয়ানের শাসনকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তুলেছেন অনেকে।

সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের অর্থনীতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে দেশটির নাগরিকদের একটি বড় অংশ অভিবাসনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লষকদের।

২০২৩ সালে পরিচালিত একটি জরিপের তথ্য দিয়ে মিডলইস্ট আইয়ের খবর বলছে, দেশটিতে মৌলিক অধিকারসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কারণে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী নাগরিকদের দুই-তৃতীয়াংশ সুযোগ পেলেই দেশ ছাড়তে চায়। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে দেশটির সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

আন্দোলনরতদের অভিযোগও সেটাই, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র ঠিকভাবে কার্যকর নেই। তবে ইমালোলুর বক্তব্যে তারা (বিক্ষোভকারীরা) আশার আলো দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।