ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

যুদ্ধ থামাতে বিশেষ কৌশল নিয়েছে ইউক্রেন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে এবার পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে কূটনৈতিক সহায়তা চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়।  

সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই রোববার (২৩ মার্চ) রাতে রাশিয়া কিয়েভের দিকে অন্তত ১৫০টি ড্রোন হামলা চালায়।

ইউক্রেনের দাবি, কিছু ড্রোন প্রতিহত করা সম্ভব হলেও কয়েকটি বিস্ফোরণের ফলে কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছে।

জেলেনস্কির আহ্বান: রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হোক

জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নতুন করে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করার সময় এসেছে। এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে বিশ্বকে একত্র হতে হবে।’

তিনি আরও দাবি করেন, গত এক সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনে ১,৫৮০টি গাইডেড বোমা, ১,১০০টি ড্রোন এবং ১৫টি মিসাইল ছুঁড়েছে। এই হামলাগুলোর জন্য ব্যবহৃত বেশকিছু সামরিক উপকরণ রাশিয়ার বাইরে থেকে এসেছে, যা নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে।  

সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শান্তি আলোচনা

রোববার সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে, এবং তারা যুদ্ধ শেষের ব্যাপারে আশাবাদী।  

আলোচনায় জ্বালানি নিরাপত্তা ও কৃষ্ণ সাগর বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পরিকল্পনা করছে, তবে কৌশলগত বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।  

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া: দ্রুত সমাধানের আশা কম

রাশিয়া বলছে, যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে এখনই কোনো দ্রুত সমাধান আসবে না।  

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার প্রাথমিক বিষয় হলো ২০২২ সালের কৃষ্ণ সাগর বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বহাল করা। এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি নির্বিঘ্নে আফ্রিকা ও ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছিল।

তবে রাশিয়া মনে করছে, শান্তি আলোচনা দীর্ঘ ও কঠিন হবে।  

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: দ্রুত যুদ্ধবিরতির আশা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। তার প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘আলোচনার গতি দেখে মনে হচ্ছে শিগগিরই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।’

সোমবারের আলোচনায় কৃষ্ণ সাগরসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। যদি কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধ না করার বিষয়ে সমঝোতা হয়, তবে বৃহত্তর সংঘর্ষ বিরতির আলোচনা শুরু হতে পারে।  

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধ থামাতে রাজনৈতিক সমঝোতার পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ আরও জোরদার করতে হবে।