প্রায় দুই দশকের সংসার ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান ৩৫ বছরের গৃহবধূ। নতুন করে বাঁধেন সংসার। কিন্তু এতে মর্মাহত হয়ে পড়েন প্রথম স্বামী। স্ত্রীকে ভুলে যেতে আয়োজন করেন ‘শ্রাদ্ধর’। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের পরাশটলা গ্রামের।
গত ১৮ মার্চ প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান সুনীতা রায় (ছদ্মনাম)। তার স্বামী অচিন্ত্য পেশায় রাজমিস্ত্রি। নিঃসন্তান এই দম্পতির সংসার ১৯ বছরের।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ জানায়, ১৯ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বরুই গ্রামে সুনীতার সঙ্গে বিয়ে হয় অচিন্ত্যের। সাতপাকে বাঁধা পড়ার সময় অগ্নিকে সাক্ষী রেখে একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিয়েছিলেন তারা। একসঙ্গে প্রায় দুই দশক কাটানোর পর অন্যের হাত ধরে পালিয়ে যান স্ত্রী।
ফেসবুকে প্রেমিকের সঙ্গে রিলস ভিডিও বানিয়ে স্বামীকে দেখানোর চেষ্টা করেন। শুধু তা-ই নয়, স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপেও সেই রিলস পাঠিয়েছেন সুনীতা। এতে স্বামীর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাই স্ত্রীকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করে তার আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) হিন্দু রীতি অনুযায়ী, স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পুরোহিত মন্ত্র পাঠ করেন, গ্রামবাসীর পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আগামী দিনে যাতে গ্রামে এই ধরনের আর কোনও ঘটনা না ঘটে তাই এই কাজ।
পরিবারের এক সদস্য আশালতা রায় বলেন, ‘আমাদের বাড়ির বউ প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছেন। তাই আমরা তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। গ্রামে যাতে আর এই ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে তারই বার্তা দিয়েছি।’
স্বামী অচিন্ত্য বলেন, ‘পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে সন্তান না হওয়ার একটা দুঃখ ছিল। রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা আয় করতাম সমস্তটাই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম। স্ত্রী গভীর রাত থেকে ফোনে কথা বলত। আমি অনেক শাসন করেছিলাম। শ্বশুরবাড়িতে জানিয়েছিলাম। এদিন আমি কাজ করতে বাইরে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমস্ত নতুন কাপড়চোপড়, বিয়ের গয়না ও ব্যাংকের ৪০ হাজার টাকাসহ আমার জীবনের সমস্ত ইনকাম নিয়ে পালিয়ে গেছে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। এরপর প্রেমিকের সঙ্গে ফেসবুকে রিলস তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে আমাকে জানানোর চেষ্টা করে।’