গ্রিনল্যান্ড সফরে গিয়ে ডেনমার্কের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তার অভিযোগ, ডেনমার্কের অবহেলার কারণে চীন ও রাশিয়ার আগ্রাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই দ্বীপ দখলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
জেডি ভ্যান্স দাবি করেন, ডেনমার্ক যথেষ্ট বিনিয়োগ করেনি গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তায়, ফলে এটি অন্যান্য দেশের অনুপ্রবেশের শিকার হতে পারে। তিনি বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের মানুষদের নিজেদের আত্মমর্যাদা রক্ষা করা উচিত এবং ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবা উচিত।’
গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে ডেনমার্কের হাতে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বীপটি দখলের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, যা নিয়ে তখনও বিতর্ক হয়েছিল।
গ্রিনল্যান্ডের প্রতিক্রিয়া
জেডি ভ্যান্সের সফরকে ভালোভাবে নেয়নি গ্রিনল্যান্ডের সরকার। দ্বীপটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান আমাদের প্রতি সম্মানের অভাব প্রকাশ করে।’
ডেনমার্কের রাজা ফ্রেডেরিকও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের জনগণের প্রতি আমার ভালোবাসা ও সম্পর্ক অটুট। এতে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়।’
সফর ও নিরাপত্তা উদ্বেগ
জেডি ভ্যান্স ও তার স্ত্রী ঊষা গ্রিনল্যান্ড সফরে যান একটি সাংস্কৃতিক ট্যুরের অংশ হিসেবে। তারা কুকুর স্লেজ দৌড় দেখতে চেয়েছিলেন। তবে তাদের আগমনের খবর পেয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করলে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। ফলে তাদের সফর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়।
ভ্যান্স ও তার দল পিচুফিক স্পেস বেস পরিদর্শন করেন, যা দ্বীপটির উত্তরতম প্রতিরক্ষা স্থাপনা। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া, চীন এবং অন্যান্য দেশগুলোর ভয়াবহ আগ্রাসন ঘটছে, যা থেকে গ্রিনল্যান্ডকে রক্ষা করতে হবে।’ তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্ব
গ্রিনল্যান্ডের অধিবাসী মাত্র ৫৭ হাজার, তবে অঞ্চলটি বিপুল খনিজ ও তেলের মজুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এখনও এসব সম্পদ উত্তোলন করা হয়নি, কিন্তু এটি বিভিন্ন দেশের নজর কাড়ছে।
জেডি ভ্যান্স সফরের শেষ দিকে গ্রিনল্যান্ডের জনগণকে আশ্বস্ত করেন যে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে না। তবে তিনি তাদের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিতে এবং ডেনমার্কের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।