পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান এবারও কারাগারে ঈদ উদযাপন করেছেন, তবে নিরাপত্তার কারণে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেননি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, টানা তৃতীয়বারের মতো রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারেই ঈদ কাটিয়েছেন ইমরান খান। তবে কঠোর নিরাপত্তার কারণে কারাগারের মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি পাননি তিনি।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঈদ উদযাপন
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দি থাকা ইমরান খান রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস, রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রিসহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে ১০০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাকে কারাগারের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়তে দেওয়া হয়নি।
তার স্ত্রী বুশরা বিবিও একই কারাগারে বন্দি রয়েছেন, এবং ঈদের নামাজের সময় তিনি ইমরানের কক্ষেই ছিলেন। অন্যদিকে, কারাগারের অন্যান্য বন্দি, বিচারাধীন বন্দি এবং কারাগার কর্মকর্তারা ঈদের জামাতে অংশ নেন।
আদিয়ালা কারাগারে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পিটিআই সমর্থকদের যেকোনো বিক্ষোভ প্রতিহত করতে কারাগারের বাইরে তিন দিনের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
- কারাগারে যাওয়ার পথে ৮টি অতিরিক্ত নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে।
- ২০০-এর বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
- এসপি সদর নাবিল খোখরের নেতৃত্বে নিরাপত্তা কর্মীরা তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন।
- কারাগারের বাইরে দাঙ্গা দমন ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।
ঈদের পোশাক পেলেন ইমরান খান
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ইমরান খানের জন্য বিশেষ কিছু পোশাক ও উপহার পাঠানো হয়। তবে কারাগারে তার ঈদ ছিল নিঃসঙ্গ এবং সীমিত পরিসরে উদযাপিত হয়।
ইমরান খানের কারাবন্দিত্ব নিয়ে পিটিআইয়ের ক্ষোভ
পিটিআই নেতারা দাবি করেছেন, ইমরান খানকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করা হচ্ছে এবং তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
পিটিআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, "ইমরান খানকে ঈদের নামাজ আদায়ের সুযোগ না দেওয়া তার প্রতি একটি অমানবিক আচরণ। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।"
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা যত দীর্ঘায়িত হবে, ততই ইমরান খানের কারাবন্দিত্ব এবং তার সমর্থকদের আন্দোলন বড় ইস্যু হয়ে উঠবে।