যুক্তরাষ্ট্র বা তাদের মিত্রদের দ্বারা কোনও ধরণের হামলার শিকার হলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ‘বাধ্য হবে’ বলে হুমকি দিয়েছেন খামেনির উপদেষ্টা আলী লারিজানি।
সোমবার (৩১ মার্চ) ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা তাদের মিত্রদের যেকোনো আক্রমণের শিকার হলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে বাধ্য হবে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে কোনো চুক্তিতে না এলে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রটিতে বোমা হামলা চালানো হবে।
এর জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ট্রাম্প যদি এই হুমকি বাস্তবায়ন করেন, তবে পাল্টা আঘাত হানতে প্রস্তুত আছে ইরান।
রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেলকে খামেনির উপদেষ্টা আলী লারিজানি বলেন, ‘আমরা (পারমাণবিক) অস্ত্রের (অধিকারী হওয়ার) দিকে অগ্রসর হচ্ছি না।
কিন্তু আপনারা যদি ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে ভুল কিছু করেন, তাহলে ইরান বাধ্য হবে এই পথে হাঁটতে—কারণ তখন তার নিজেকে রক্ষা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান এটা করতে চায় না, কিন্তু...তার আর কোনো উপায় থাকবে না। কোনো পর্যায়ে যদি আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেরা বা ইসরায়েলের মাধ্যমে বোমা হামলার পথে যান, তবে ইরান অন্য সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
এর আগে, এনবিসি নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল , পারমাণবিক চুক্তি না হলে ইরানে ‘বোমাবর্ষণ হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি আরও হুমকি দেন, তেহরানের ওপর ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’ নামের কঠোর শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে।
তবে ট্রাম্পের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়নি, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে একা হামলা চালাবে, নাকি কোনো মিত্র দেশের (সম্ভবত ইরানের শত্রু ইসরায়েল) সঙ্গে যৌথভাবে হামলা চালাবে।
রমজান শেষে ছুটির দিনে দেওয়া এক ভাষণে খামেনি বলেন, ‘তারা অপকর্মের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু এই হুমকি যদি বাস্তব হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে তারা শক্তিশালী প্রতিআক্রমণের মুখোমুখি হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী সুইস দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে।
ইরানের ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সিনির কমান্ডার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেন, ‘ইরানের চারপাশে মার্কিনীদের অন্তত ১০টি ঘাঁটি আছে। সেগুলোতে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যারা কাচের ঘরে রয়েছে, তাদের উচিত হবে না অন্যের দিকে পাথর ছোড়া।’
২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে সম্মত হয়েছিল ইরান।
পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে। যদিও তেহরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত বলে দাবি করেছ ইরান।